পঞ্চগড়ে টানা ঘন কুয়াশা ও কনকনে শীতে জনজীবন ক্রমেই বিপর্যস্ত হয়ে উঠছে। জেলার তেঁতুলিয়ায় প্রতিদিনই তাপমাত্রা নিম্নমুখী থাকায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ, যানবাহন চালক, শিশু ও বয়স্করা।

বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১০০ শতাংশ। ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত সড়ক, মাঠ ও ঘাট ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকায় দৃষ্টিসীমা কমে যায়। ফলে যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।

এর আগের দিন বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেদিন বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ এবং বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১১ থেকে ১২ কিলোমিটার। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল মাত্র ১৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিকেলের দিকে কিছু সময় সূর্যের দেখা মিললেও সন্ধ্যার পর থেকেই শীতের তীব্রতা আবার বেড়ে যায়।

টানা কুয়াশা ও কনকনে শীতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। সকালে অনেকেই কাজে যেতে পারছেন না। শীত থেকে বাঁচতে বিভিন্ন এলাকায় মানুষকে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে দেখা গেছে। সন্ধ্যার পর থেকে বৃষ্টির মতো ঝরছে শিশির, যা শীতের অনুভূতিকে আরও বাড়িয়ে তুলছে।

সদর উপজেলার তালমা এলাকার শ্রমিক কুদ্দুস বলেন, সকালে কাজে বের হওয়া খুবই কষ্টকর। এত ঠান্ডা থাকে যে হাত-পা অবশ হয়ে আসে। কাজ না করলে সংসার চলে না, আবার ঠান্ডার মধ্যে কাজ করাও কঠিন।

তেঁতুলিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকার ভ্যানচালক রহমান বলেন, ঠান্ডার কারণে যাত্রী খুব কম, আয় একেবারেই কমে গেছে।

মোটারসাইকেল চালক আব্দুল্লাহ বলেন, কুয়াশার কারণে হেডলাইট জ্বালিয়েও তেমন কিছু দেখা যায় না। খুব ধীরে ধীরে মোটারসাইকেল চালাতে হয়।

আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি শীত মৌসুমে তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় গত ১১ ডিসেম্বর। সেদিন তাপমাত্রা নেমে আসে ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা এ মৌসুমে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, ১১ থেকে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত তেঁতুলিয়ায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে। মাঝখানে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও পরবর্তী দিনগুলোতে আবার কমছে। ডিসেম্বরের শেষ দিকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও তিনি জানান।

নুর হাসান/এআরবি