দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (সিআইপি) হিসেবে নির্বাচিত নোয়াখালীর তিন সহোদরকে সংবর্ধনা দিয়েছে এলাকাবাসী। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার দেওটি ইউনিয়নে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।

সংবর্ধিত তিন ভাই হলেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ডা. মোস্তফা-হাজেরা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ক্যাপ্টেন এ.কে.এম. গোলাম কিব্রীয়া, ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও উপদেষ্টা গোলাম মর্তুজা এবং জহিরুল ইসলাম। এর মধ্যে ক্যাপ্টেন এ.কে.এম. গোলাম কিব্রীয়া আন্তর্জাতিক পরিসরে গ্লোবাল হিউম্যানিটি অ্যাওয়ার্ডেও ভূষিত হয়েছেন।

জানা গেছে, জীবনের বহু চড়াই-উতরাই পেরিয়ে এই তিন সহোদর আজ সাফল্যের শিখরে পৌঁছেছেন। তারা তাদের প্রয়াত বাবা ডা. মোস্তফা ও মা হাজেরা বেগমের নামে প্রতিষ্ঠিত ডা. মোস্তফা-হাজেরা ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে দেশে ও বিদেশে শিক্ষা বিস্তার, অসহায় মানুষের চিকিৎসাসেবা, গৃহনির্মাণসহ নানা মানবিক ও সামাজিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে চাটখিল ও সোনাইমুড়ী উপজেলায় তাদের মানবকল্যাণমূলক কার্যক্রম ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে।

একই পরিবারের তিন ভাইয়ের একসঙ্গে সিআইপি সম্মাননা অর্জনে উচ্ছ্বসিত এলাকাবাসী। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সমাজসেবা ও মানবিক কর্মকাণ্ডে তিন সহোদরের অবদান এখন স্থানীয় গণ্ডি পেরিয়ে জাতীয় পর্যায়ে স্বীকৃতি পেয়েছে। তাদের এই অর্জন নতুন প্রজন্মকে মানবকল্যাণ ও সমাজসেবায় অনুপ্রাণিত করবে।

অনুষ্ঠানে সিআইপি ও গ্লোবাল হিউম্যানিটি অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন এ.কে.এম. গোলাম কিব্রীয়া বলেন, আমরা খুব সাধারণ পরিবারে বড় হয়েছি। আমার বাবা ডা. মোস্তফা ভাতের টাকা জোগাড় হলেই মানবসেবা করতেন। জীবনে অনেক কষ্ট করেছি। মানুষের ভালোবাসা ও মায়ের দোয়াতেই আমরা আজ এই সম্মাননা পেয়েছি। এই সম্মান আমরা আমাদের গ্রামের মানুষকে উৎসর্গ করছি। ভবিষ্যতেও মানবিক কাজের মাধ্যমে মানুষের পাশে থাকতে চাই।

দেওটি বাজার স্পোর্টিং ক্লাব ও বানিপুর ভিক্টোরিয়া হেল্পিং ক্লাব যৌথভাবে এ সংবর্ধনার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের শুরুতে ফুল দিয়ে অতিথিদের বরণ করে নেওয়া হয়। পরে তিন সহোদর তাদের জীবনসংগ্রাম ও মানবিক কাজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। শেষে তাদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দিয়ে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। 

ডা. মোস্তফা-হাজেরা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা আয়োজনকারী সংগঠনগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়।

প্রসঙ্গত, সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রেরণের স্বীকৃতি হিসেবে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস-২০২৫ উপলক্ষে গত ১৮ ডিসেম্বর ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই তিন ভাইয়ের হাতে সিআইপি অ্যাওয়ার্ড তুলে দেন।

সিআইপি নির্বাচিত হওয়ায় আগামী দুই বছর তারা রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাবেন। এর মধ্যে রয়েছে—সচিবালয়ে প্রবেশের পাস, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবসের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ, বিমান-রেল ও সড়কপথে আসন সংরক্ষণে অগ্রাধিকার, বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জ ও চামেলী ব্যবহারের সুবিধা এবং নিজের ও পরিবারের জন্য সরকারি হাসপাতালে কেবিন সুবিধা।

হাসিব আল আমিন/এমএএস