ঝিনাইদহ-৪ আসনে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে লড়বেন বলে গুঞ্জন উঠেছে। তিনি ঝিনাইদহ-২ আসন দাবী করলেও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঝিনাইদহ-৪ নির্বাচনী এলাকায় রাশেদ খানের পক্ষে নির্বাচনী সভা করবেন, এমন প্রতিশ্রুতি দিলে রাশেদ খান ঝিনাইদহ-৪ ( কালীগঞ্জ ) আসনে প্রার্থী হতে সম্মত হন।

বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাশেদ খান নিজেই এ তথ্য জানিয়েছেন গণমাধ্যমকর্মীদের।

রাশেদ খান ঝিনাইদহ-৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী হওয়ার মধ্য দিয়ে চারটির মধ্যে তিনটি আসনে বিএনপি প্রার্থী চুড়ান্ত করেছে। এরমধ্যে ঝিনাইদহ-২ আসনে এ্যাড এম এ মজিদ ও ঝিনাইদহ-৩ আসনে আগেই সাবেক সাংসদ শহিদুল ইসলাম মাষ্টারের ছেলে মেহেদী হাসান রনির মনোনয়ন চুড়ান্ত করে দলটি।

তবে এই আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে রাশেদ খানের নাম ঘোষণার পর থেকেই কালীগঞ্জের সাধারণ ভোটারদের মধ্যে নানা ধরণের প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। তবে এটা সাময়িক বলে মনে করছেন দলের নীতি নির্ধারকরা।

দেখা যায়, ঝিনাইদহ-৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে নতুন করে রাশেদ খানের নাম চাউর হওয়ায় নানা রকম প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। কালীগঞ্জের সাধারণ ভোটার ও বিএনপির সাধারণ কর্মীদের মাঝেও ছড়িয়েছে নেতিবাচক প্রভাব। তারা বলছেন, বিগত দিনগুলোতে কালীগঞ্জে বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক হামিদুল ইসলাম হামিদ ও কেন্দ্রীয় সেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ।

স্থানীয় বিএনপির রাজনীতিতে হেভিওয়েট এই দুজন। তাদেরকে পাশ কাটিয়ে রাশেদ খানকে দলীয় প্রার্থী দেয়ায় অসন্তোষ বাড়ছে ভোটারদের মাঝে। যার প্রভাব নির্বাচনের ফলাফলে প্রতিফলিত হতে পারে বলে ধারণা সাধারণ ভোটারদের।

কালীগঞ্জের একাধিক তৃণমূল পর্যায়ের বিএনপি নেতাকর্মী জানান, ঝিনাইদহ-৪ আসনে জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির মূল প্রতিদ্বন্দিতা হওয়ার কথা। নির্বাচনী হালচাল সেটাই জানান দিচ্ছে। কাজেই এই আসনে দলের ত্যাগী প্রার্থীরা স্থান পেলে বিএনপির ভোটের পাল্লা ভারি হওয়া সহজ ছিল। তবে, রাশেদ খান বিএনপির প্রার্থী হলে কালীগঞ্জের তৃণমূল বিএনপি নেতাকর্মীরা কি ধরণের প্রতিক্রিয়া দেখাবে সেটাই দেখার বিষয়। এদিকে গুঞ্জন উঠেছে এই আসনে রাশেদ খান ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে লড়বেন। তিনি যদি বিএনপিতে যোগ দিয়ে ধানের শীষ প্রতীকে লড়েন, তাহলে ভোটের সমীকরণ পাল্টে যাবে। রাশেদ খান বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন বলেও মনে করেন সাধারণ ভোটাররা।

কালীগঞ্জের সাধারণ ভোটার শাহ আলম বলেন, কালীগঞ্জে বিএনপির রাজনীতি বলতে হামিদ ও ফিরোজ ভাই। আমরা এই দুজনের যেকোনো একজনকে প্রার্থী হিসেবে পাবো বলে আশা করেছিলাম। কিন্ত তা তো আর হলো না।

ঝিনাইদহ জেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি শাখাওয়াত হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিএনপির সাথে আমাদের জোট হয়েছে। সেই কারণে বিএনপি ঝিনাইদহ-৪ আসন রাশেদ খানের জন্য ছেড়ে দিয়েছেন। তবে আমরা জানতে পেরেছি এই আসনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে লড়বেন জানতে পেরেছি। তবে এখনো নিশ্চিত নয়। গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ভিপি নূর এবং সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান তারাই জানাবেন বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন কি না।

মনোনয়নের বিষয়টি নিশ্চিত করে রাশেদ খান বলেন, মঙ্গলবার রাতে গুলশানে বিএনপির অফিসে আলোচনা হয়েছে। সেখানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ, খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি এম এ মজিদ উপস্থিত ছিলেন। ওই আলোচনায় ঝিনাইদহ-৪ আসনে বিএনপির পক্ষ থেকে আমাকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত প্রাথমিক ভাবে গৃহিত হয়েছে।

ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনা বলেন, ঝিনাইদহ-৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে রাশেদ খান লড়বেন। তিনি (রাশেদ খান) বিএনপি নেতৃত্বাধীন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের সহযোদ্ধা। রাশেদ খান সম্ভবত ধানের শিষ প্রতীক নিয়ে ভোট করবেন। সেটা হলে তিনি তো আমাদেরই লোক। কাজেই, বিএনপির নেতাকর্মীরা রাশেদ খানের পক্ষ্যেই থাকবেন। আমরাও জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে রাশেদ খানের জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাবো।

আব্দুল্লাহ আল মামুন/এসএমডব্লিউ