রাজশাহী বিভাগে মহামারি করোনাভাইরাসে প্রাণহানি ৯০০ ছাড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগে মারা গেছেন আরও ১০ জন। এ নিয়ে আট জেলায় করোনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৯১০ জনে।

৩০ জুন বিভাগজুড়ে প্রাণ হারান ২২ জন। করোনা শনাক্তের পর বিভাগে এক দিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড এটি। এদিকে, ২৪ ঘণ্টায় বিভাগে ৮৫১ জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এ নিয়ে বিভাগের করোনা শনাক্ত দাঁড়াল ৫৭ হাজার ৮৮৪ জনে।

শুক্রবার (২ জুলাই) দুপুরের দিকে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতরের সহকারী পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. নাজমা আক্তার স্বাক্ষরিত এক সংবাদবিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। 

বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতরের হিসেবে, রাজশাহী বিভাগে প্রথম করোনা শনাক্ত হয় গত বছরের ১২ এপ্রিল। গত বছরের ২৯ জুন বিভাগে করোনা সংক্রমণ ৫ হাজারে দাঁড়ায়। সংক্রমণ বাড়তে থাকায় গত বছরের ২০ জুলাই পৌঁছে যায় ১০ হাজারে। 

সংক্রমণের মাত্রা তীব্র হওয়ায় প্রায় দুই মাসের ব্যবধানে ৩০ সেপ্টেম্বর সংক্রমণ দ্বিগুণ অর্থাৎ ২০ হাজারে পৌঁছায়। এরপর কিছুটা কমে সংক্রমণের মাত্রা। এই বছরের ২০ জানুয়ারি সংক্রমণ পৌঁছায় ২৫ হাজারে।

ঈদুল ফিতরের পর এই অঞ্চলে ফের বাড়তে শুরু করে করোনা সংক্রমণ। ১৯ এপ্রিল ৩০ হাজার, ৩০ মে ৩৫ হাজার, ১০ জুন ৪০ হাজার, ১৭ জুন ৪৫ হাজার, ২৬ জুন ৫০ হাজার এবং ৩০ জুন ৫৫ হাজার ছাড়িয়ে যায় সংক্রমণ। করোনার ডেল্টা ধরন ছড়িয়ে পড়ায় প্রতিদিনই লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার।

এদিকে, বিভাগের আট জেলায় ২৪ ঘণ্টায় যে ৮৫১ জনের করোনা ধরা পড়েছে তার মধ্যে ২৪৪ জনই পাবনা জেলার বাসিন্দা। এছাড়া রাজশাহীতে ২৪১, বগুড়ায় ১০০, নাটোরে ৭৮, সিরাজগঞ্জে ৬৮, নওগাঁর ৪৯, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৪০ এবং জয়পুরহাটে ৩১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতরের হিসেবে, ২৪ ঘণ্টায় বগুড়ায় ১১ জন, রাজশাহীতে ৪ জন, নওগাঁয় তিনজন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে একজন এবং নাটোরে একজনসহ বিভাগে করোনায় ২০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এই একদিনে জয়পুরহাট, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলায় করোনায় মৃত্যুর খবর মেলেনি।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিভাগে করোনায় যে ৯১০ জন প্রাণ হারিয়েছেন তার মধ্যে সর্বোচ্চ ৪০৮ জন বগুড়া জেলার বাসিন্দা। এছাড়া রাজশাহীতে ১৬৪, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১১৪, নওগাঁয় ৮৫, নাটোরে ৫৭, সিরাজগঞ্জে ৩০, জয়পুরহাটে ২৯ এবং পাবনায় ২৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন।

এ পর্যন্ত বিভাগের আট জেলায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৬ হাজার ৫২২ জন। এর মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২০৮ জন। এ পর্যন্ত বিভাগে করোনাজয় করেছেন ৪০ হাজার ৬৯ জন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৬২২ জন।

ফেরদৌস সিদ্দিকী/এমএসআর