যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে বন্দিদের বিক্ষোভ- ভাঙচুর
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মো. সায়েমুজ্জামান
যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে (বালক) বন্দিরা তিন ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ ও ভাঙচুর চালিয়েছে। শনিবার (১০ জুলাই) রাতে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বন্দিরা জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে তাদের সমস্যার কথা তুলে ধরে। সমস্যা সমাধানের আশ্বাস পেয়ে বন্দিরা শান্ত হয়।
জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান বলেন, দেড়শ জনের ধারণক্ষমতার কেন্দ্রটিতে ২৫০ জন বন্দি রয়েছে। বেশ কিছু বিষয়ে তাদের অসন্তোষ রয়েছে। শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তারা বিক্ষোভ শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা ব্যাপক ভাঙচুর করে। পরে আইনশৃংখলা বাহিনীর পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা সেখানে যান।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, আমি নিজেও গিয়েছিলাম। তাদের কথা শুনেছি। সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছি। তিন ঘণ্টা পর রাত দেড়টার দিকে বিক্ষুব্ধ বন্দিদের শান্ত করা সম্ভব হয়েছে। সেখানে ভাঙচুর হলেও কেউ আহত হয়নি। তদন্ত কমিটি গঠন করে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মো. সায়েমুজ্জামান বলেন, করোনাকালে কেন্দ্রের বন্দিদের বাইরে বের হতে দেওয়া হয় না। এজন্য তাদের ক্ষোভ আছে। খাবারের মান নিয়ে অভিযোগ আছে। এছাড়াও সুপেয় পানির সমস্যা আছে। এমন বেশ কয়েকটি দাবিতে বন্দিরা বিক্ষোভ করেছে। আলোচনা করে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক জাকির হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, বেশ কয়েকদিন ধরে কেন্দ্রে বন্দিরা প্রত্যেকের খাদ্যের জন্য ৭২ টাকা করে বরাদ্দের দাবি করছিল। তাছাড়া, কেন্দ্রে আলাদা আলাদা রুমে সিনিয়র জুনিয়র ভেদে খাদ্য সরবরাহের এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার দাবি করছিল। সেই দাবিতে রাতে বন্দিদের মধ্যে বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে কেন্দ্রের আনসার সদস্যরা বিক্ষোভ বন্ধে অভিযান চালান। পাশাপাশি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে যশোর জেলা পুলিশের শতাধিক সদস্য।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে একাধিক কর্মকর্তার নেতৃত্বে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য অবস্থান নেন। প্রস্তুত রাখা হয় ফায়ার সার্ভিসের গাড়িও।
২০২০ সালের ১৩ আগস্ট যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে তিন বন্দি কিশোর হত্যা ও ১৫ জন আহত হওয়ার ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছিল। একাধিকবার তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হয়নি। ফলে কেন্দ্রে বারবার এমন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জাহিদ হাসান/আরএইচ