বাড়িতে গিয়ে স্বজনকে চিকিৎসা না দেওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক আবু জাহিদ মাহমুদকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন মিজানুর রহমান (২৬) নামের এক যুবক। মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) সকালে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর তাকে আটক করেছে পুলিশ। গত বছরের ৫ ডিসেম্বর একই হাসপাতালের এক নার্সকে চুরিকাঘাত করেন এই মিজানুর রহমান। 

আটক মিজানুর রহমান শহরতলির সুলতানপুরের বাসিন্দা আকিল মিয়ার ছেলে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, মিজানুর রহমান ও তার বড় ভাই সালেক মিয়া মঙ্গলবার সকালে অসুস্থ স্বজনকে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য চিকিৎসককে বাড়িতে নিতে হাসপাতালে আসেন। এ সময় কর্তরত চিকিৎসক আবু জাহিদ মাহমুদ জরুরি বিভাগ ছেড়ে যেতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন। পরে তারা চিকিৎসকের ওপর চড়াও হয়ে তাকে চড় মারেন।

সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আনিছুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তবে হাসপাতালে পুলিশি নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানান তিনি।

সুনামগঞ্জ বিএমএর সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সৈকত দাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, করোনা পরিস্থিতির মাঝে চিকিৎসকরা ঝুঁকি নিয়ে মানুষকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে যে ঘটনা ঘটল, তা নিন্দনীয়। এ ঘটনার মূল হোতা মিজানুর রহমান ও তার ভাই সালেক মিয়ার বিচার দাবি করেন তিনি।

সুনামগঞ্জ সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) এজাজুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ ঘটনায় মিজানুর রহমানকে আটক করা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। মামলা করা হলে তদন্ত করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সিসিটিভির ফুটেজে যা দেখা যায়
সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায় মিজানুর রহমানসহ আরও কয়েকজন হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসেন। এ সময় তার পরনে কালো টি-শার্ট ও থ্রি-কোয়ার্টার প্যান্ট ছিল। জরুরি বিভাগে তখন একজন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক আবু জাহিদ মাহমুদ রোগী দেখে ব্যবস্থাপত্র লিখছিলেন। এ মসয় মিজানুর রহমান এসে আবু জাহিদ মাহমুদের সামনে দাঁড়ান। কথোপকথনের মাঝে তারা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। হঠাৎ করে মিজান লাফ দিয়ে এসে চিকিৎসকের গালে সজোরে চড় মারেন। এ সময় পাশে থাকা লুঙ্গি ও টি-শার্ট পরা বড় ভাই সালেক মিয়া মিজানকে টেনে পাশে সরিয়ে দেন।

উল্লেখ্য গত বছর ৫ ডিসেম্বর একই হাসপাতালের এক নার্সকে চুরিকাঘাত করেন মিজানুর রহমান। সেদিন হাসপাতালের ৬ তলায় উঠে মিজান হাসপাতালের এক আয়াকে খুঁজতে থাকেন। এ সময় কর্তব্যরত নার্স শ্রামন্তী জানতে চান কেন তাকে খুঁজছেন। তখন উত্তেজিত মিজান তর্ক শুরু করেন। পরে পকেট থেকে চুরি বের করে শ্রামন্তীর গলায় পোঁচ দেওয়ার চেষ্টা করেন। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে শ্রামন্তীর বাঁ হাতের কয়েকটি আঙুলে কেটে যায়। হইচই শুরু হলে মিজান ও তার সঙ্গীরা পালিয়ে যান।

সাইদুর রহমান আসাদ/এনএ/জেএস