সাতক্ষীরায় একমাস ধরে বেক্সিমকো কোম্পানির নাপা ওষুধের সরবরাহ নেই। জ্বর, গায়ে ব্যথা, মাথা ব্যথাসহ সর্দি-কাশির প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় চাহিদা বেড়েছে এ ওষুধের। ফলে দেখা দিয়েছে নাপার সংকট। 

জেলা সদরসহ সাতটি উপজেলাজুড়ে চলছে একযোগে এ সংকট। বিক্রেতারা বলছেন, কোম্পানি চাহিদার তুলনায় সরবরাহ দিতে পারছে না। সেকারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তবে নাপা গ্রুপের ওষুধ না থাকলেও বাকি কোম্পানির ওষুধের যথেষ্ট সরবরাহ রয়েছে। নাপার পরিবর্তে সেই ওষুধ এখন ক্রেতাদের মাঝে সরবরাহ করা হচ্ছে।

তালা উপজেলা সদরের ওষুধের দোকানগুলোতে ঘুরে কোথাও নাপা খুঁজে পাননি শিবপুর গ্রামের কামরুল ইসলাম। আজ বুধবার (১৪ জুলাই) উপজেলা থেকে শহরে ওষুধ কিনতে আসেন। তবে শহরেও পাননি নাপা। অবশেষে বিকল্প হিসেবে স্কয়ার কোম্পানির এইচ প্লাস কিনতে হয়েছে তাকে।

কামরুল ইসলাম জানান, নাপা না থাকায় বিকল্প ওষুধ দিয়েছে দোকানদার। দোকানদার বলছে, নাপা গ্রুপের কোনো ওষুধ নেই।

তালা সদরের শাহাপুর গ্রামের খায়রুল বাসার বাবু জানান, গ্রামের প্রায় প্রত্যেক ঘরে ঘরে সর্দি, কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে মানুষ। কেউ চিকিৎসকের কাছে যায় আবার কেউবা যায় না। দোকান থেকে ওষুধ কিনে বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছে। বাজারের ওষুধের দোকানগুলোতে নাপা নেই। দোকানদাররা জানাচ্ছেন, কোম্পানি সাপ্লাই দিচ্ছে না। 

সাতক্ষীরা শহরের নিউ মার্কেট এলাকায় ওষুধের বড় দোকান সাতক্ষীরা ফার্মেসি। দোকানটির সত্ত্বাধিকারী আরিফুজ্জামান জানান, বেক্সিমকো কোম্পানি গত একমাস ধরে নাপা সরবরাহ দিতে পারছে না। রাজধানীসহ বিভাগীয় শহরগুলোতেও নাপার চাহিদা বেড়েছে। সেখানের চাহিদা মিটিয়ে সাতক্ষীরায় ওষুধ সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে অন্য সব কোম্পানির ওষুধের সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। সাধারণত মানুষ প্যারাসিটামল নাপার নামটা জানে বেশি। এ কারণে দোকানে এসেই এটা খোঁজে। জ্বর, গায়ে ব্যথা, সর্দি, কাশির প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার কারণে মানুষ প্রয়োজনের থেকেও বেশি ওষুধ কিনছে। তাই সংকট তৈরি হয়েছে। 

সাতক্ষীরা শহরের পপুলার ফার্মেসীর সত্ত্বাধিকারী মো. রুহুল আমিন। তিনি জানান, বেক্সিমকো কোম্পানির নাপার চাহিদা খুব বেশি। এদিকে কোম্পানি সরবরাহ করতে পারছে না। মাঝে মধ্যে এক-দুই প্যাকেট দিচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে তা বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার কারণে এই ওষুধের চাহিদা বেড়েছে। 

সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় বেক্সিমকোর ম্যানেজার (মার্কেটিং) নির্মল কুমার জানান, কিছুদিন আগে নাপার সংকট বেশি ছিল। এখন সংকট কম। একজন দোকানির চাহিদা দেখা গেল ১০ বক্স, আমরা দিচ্ছি ৫ বক্স। মোটেও যে দিচ্ছি না তেমন নয়। গত দেড় মাস ধরে এমনটা হচ্ছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সংকট কেটে যাবে। 
 
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. মো. হুসাইন শাফায়াত বলেন, শুধু সাতক্ষীরা নয়, সারাদেশেই করোনার প্রার্দুভাব বেড়েছে। সর্দি, কাশি, জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। প্রয়োজনের তাগিদে ওষুধ কিনছে। নাপা ছাড়াও বিভিন্ন কোম্পানির ওষুধ রয়েছে। নাপার সংকট দেখা দিলে অন্য গ্রুপের ওষুধ তারা খেতে পারবেন। 

আকরামুল ইসলাম/এইচকে