টাকা নয়, হাসির বিনিময়ে ওষুধ ও অক্সিজেন মেলে মানবতার দোকানে
খুলনা ১৩০ শয্যার করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের সামনে বিভিন্ন প্রকারের ওষুধ ও অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে বসেছে মানবতার দোকান। এখানে করোনা রোগীদের জন্য ফ্রি মেডিসিন কর্নার, অক্সিজেন সিলিন্ডার ও রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) দুপুরে খুলনা অক্সিজেন ব্যাংকের উদ্যোগে এ মানবতার দোকান চালু করা হয়।
বিজ্ঞাপন
অক্সিজেন ব্যাংকের সদস্যরা জানান, খুলনা করোনা হাসপাতালে রোগীর চাপ অনেক বেশি। অনেক রোগীর হাসপাতালের সামনে এসে অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। অনেকের স্বজন না খেয়ে থাকেন। অনেক ভর্তি রোগী বেশি দামী ওষুধ কিনতে পারেন না। যে কারণে খুলনা অক্সিজেন ব্যাংক মানবতার দোকান খুলেছে। রোগীদের সুবিধার্থে হাসপাতালের সামনেই বাঁশ দিয়ে সামিয়ানা টাঙিয়ে দোকান প্রস্তুত করা হয়েছে। দোকানের সামনে অক্সিজেন সিলিন্ডার, টেবিলে ওষুধ নিয়ে বসে আছেন সংগঠনের কর্মীরা।
মানবতার এ দোকান থেকে প্যারাসিটামল, আই পেনাম, ম্যাক্সপ্রো, প্যারিনক্স, নিনাভির, মক্সকুইন, মিরাকফ, ব্রেক্সিটল, বেমসিভিরসহ ২২ ধরনের ওষুধ বিনামূল্যে প্রদান করা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
খুলনা অক্সিজেন ব্যাংকের কোষাধ্যক্ষ মো. আসাদ শেখ বলেন, অক্সিজেন ব্যাংক গতবছর করোনা প্রাদুর্ভাবের পর থেকে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। লকডাউনে কর্মহীন, অসহায়, পথশিশুদের মাঝে খাবার বিতরণ, খাদ্য সামগ্রী বিতরণ, অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহসহ নানা মানবিক কাজ করে আসছে। এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত রোগীদের ২ হাজারের বেশি অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ করা হয়েছে। সেই কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে করোনা হাসপাতালের সামনে মানবতার দোকান খোলা হয়েছে। এখানে সাধারণ মানুষ সেবা নিতে পারবেন। এই মানবতার দোকানে রয়েছে; ফ্রি মেডিসিন সেবা, ফ্রি জরুরি অক্সিজেন সাপোর্ট ও গ্রাম থেকে আসা রোগীর পরিবারের মাঝে খাবার বিতরণ।
খুলনা অক্সিজেন ব্যাংকের উপদেষ্টা শাহ জিয়াউর রহমান স্বাধীন বলেন, গ্রাম থেকে আসা রোগীর স্বজনরা করোনা হাসপাতালের সামনে অক্সিজেনসহ নানা বিষয়ে ছোটাছুটি করেন। অনেক সময় অ্যাম্বুলেন্সে থাকা রোগীদের অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। এছাড়া রোগীর স্বজনরা খাবার না পেয়ে অনেক সময় ক্ষুধার্ত থাকেন। যে কারণে খুলনা অক্সিজেন ব্যাংক রোগীর স্বজনদের মাঝে প্রতিদিন দুপুরের খাবার বিতরণের ব্যবস্থা করেছে। একইসঙ্গে দোকানে ওষুধ এবং অক্সিজেন সিলিন্ডার রাখা হয়েছে। আমরা টাকার বিনিময়ে ওষুধ দেই না, হাসির বিনিময়ে ওষুধ দিচ্ছি।
এদিকে খুলনা অক্সিজেন ব্যাংকের এই উদ্যোগ সাড়া ফেলেছে খুলনায়। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও মানুষের কাছ থেকে প্রশংসা পেয়েছে।
আব্দুর রাজ্জাক নামে এক ব্যক্তি বলেছেন, ইতিহাস সৃষ্টি করলো খুলনার গুটিকয়েক ছেলে। হাসির বিনিময়ে ওষুধ সরবরাহ, কি অবাক করা ব্যাপার! তাদের এ উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়।
উল্লেখ্য, করোনাকালে বেশকিছু সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন খুলনায় ফ্রি অক্সিজেন সেবা, খাদ্য বিতরণ, ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স সেবাসহ নানা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। খুলনা অক্সিজেন ব্যাংক তার মধ্যে অন্যতম।
এসকেডি