প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া ঈদ উপহার ও কোরবানির জন্য ২৩৫টি গরু পেয়ে আনন্দ মিছিল করেছেন ভাসানচরের রোহিঙ্গারা। সোমবার (১৯ জুলাই) সকালে উপহার সামগ্রী ও কোরবানির পশু নিয়ে তারা আনন্দ মিছিল করেন। 

নৌবাহিনীর ভাসানচর ক্যাম্পের ইনচার্জ শংকর বিশ্বাস দুপুরে ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি বলেন, জীবন নির্বাহ প্রকল্পে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া ঈদ উপহার এবং কোরবানির পশু নিয়ে ওয়্যার হাউসের সামনে থেকে আনন্দ মিছিল বের করেন রোহিঙ্গারা। গরুগুলোকে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়। বিভিন্ন ক্লাস্টার এলাকা প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় একই স্থানে গিয়ে শেষ হয় আনন্দ মিছিলটি।

শংকর বিশ্বাস আরও বলেন, গত দুদিন ধরেই ভাসানচরের রোহিঙ্গাদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। প্রথম দিনে পৌঁছে দেওয়া হয় ভ্যান গাড়ি, সেলাই মেশিন ও মাছ ধরার জালসহ নানা সামগ্রী। এরপর ২৩৫টি গরু পৌঁছে দেওয়া হয়। 

ভাসানচরে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তারা বলেন, মূলত জীবিকা নির্বাহের নানা সামগ্রী ও কোরবানির গরু দেওয়ায় রোহিঙ্গারা আনন্দ মিছিল করেন। মিছিলকারীরা গরুগুলোর গায়ে মালা ও বেলুন ঝুলিয়ে তাদের আবাসের কাছে নিয়ে যান। মিছিলকারী রোহিঙ্গারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি নিয়ে তার প্রতি কৃতজ্ঞতাও জানান। 

কোরবানির বিষয়ে আয়েশা বেগম নামে এক রোহিঙ্গা নারী বলেন, ঈদ তো আনন্দের উপলক্ষ। শুনেছি সবার ঘরে ঘরে গরুর মাংস দেওয়া হবে। ছেলে-মেয়েদের নিয়ে ভালোভাবে ঈদ কাটবে। গত ঈদের মতো এবারও বাচ্চাদের জন্য খেলাধুলার আয়োজন থাকছে। এতো বড় খোলামেলা এলাকা। সবাইকে নিয়ে এখানে ঘুরতেও ভালো লাগে। 

ভাসানচরের আশ্রয়ণ-৩ প্রকল্পের পরিচালক কমডোর এম রাশেদ সাত্তার জানান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং এনজিও অ্যাফেয়ার্স ব্যুরো কয়েকটি দেশি-বিদেশি সাহায্য সংস্থাকে সম্পৃক্ত করে রোহিঙ্গাদের জন্য দুই শতাধিক গরু দিয়েছে। এসব নিয়ে কোরবানির ঈদের আয়োজন করা হচ্ছে।  ভাসানচরের প্রতিটি পরিবারের মধ্যে কোরবানির ঈদের দিন মাংস বিতরণ করা হবে।

অন্যদিকে বেসরকারি সাহায্য সংস্থা ইসলামিক রিলিফ বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ প্রকল্প ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ জাফর আলম জানান, ভাসানচরের রোহিঙ্গাদের জন্য ইসলামিক রিলিফ ১৩৫টি গরু বগুড়া থেকে এনেছে। কোরবানির দিন প্রতিটি গরু দিয়ে ৩৫টি পরিবারের মধ্যে গড়ে দুই কেজি মাংস দেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচর দ্বীপে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের তত্ত্বাবধানে ২০২০ সালের ৪ ডিসেম্বর প্রথম দফায় এক হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গাকে কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়। এরপর একই বছরের ২৯ ডিসেম্বর আরও এক হাজার ৮০৪ জন, চলতি বছরের ২৯-৩০ জানুয়ারি দুই হাজার ৪২১ জন ও ১৩ ফেব্রুয়ারি তিন হাজার ৬০০ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়।

হাসিব আল আমিন/আরএআর