লকডাউনের কারণে বাজারে ক্রেতা না থাকায় বাধ্য হয়ে ফেরি করে ইলিশ বিক্রি করছেন পাইকারি ব্যবসায়ী বাবুল হোসেন। প্রতি কেজি ইলিশের দাম মাত্র ২০০ টাকা। ৪০০-৫০০ টাকার ইলিশ অল্প দামে পেয়ে ক্রেতারাও খুশি।

বাবুল হোসেন খুলনার রূপসা এলাকার কবির হোসেনের ছেলে। রূপসা মাছের আড়তের একজন পাইকারি মাছ ব্যবসায়ী তিনি। রোববার (২৫ জুলাই) সাতক্ষীরার তালা সদরের মাঝিয়াড়া বাজারে মাইকিং করে মাছ বিক্রি করতে দেখা যায় তাকে।

মাছ ব্যবসায়ী বাবুল হোসেন জানান, ঈদের আগে মাছগুলো এনেছিলাম। তবে বিক্রি হয়নি। লকডাউনের মধ্যে পড়ে বাজারেও ক্রেতা নেই। তাই বাধ্য হয়ে ফেরি করে বিক্রি করতে হচ্ছে। অন্য সময় এই মাছ বিক্রি হয় ৪০০-৪৫০ টাকা কেজি দরে। প্রতিদিন ৬০ কেজি করে মাছ নিয়ে বের হচ্ছি। খরচ বাদ দিয়ে ৬০০-৮০০ টাকা লাভ থাকছে।

তিনি বলেন, এখন বাজারে ইলিশের সরবরাহ যথেষ্ট রয়েছে। তবে লকডাউনের কারণে বিক্রি নেই। দোকানপাট বন্ধ থাকায় বাজারে মানুষও নেই। বর্তমানে আমার কাছে তিন হাজার কেজি (তিন টন) ইলিশ মাছ রয়েছে। ইলিশ মাছগুলো চট্টগ্রাম থেকে এনেছিলাম। এটি সাগরের মাছ। মাছগুলো যেন নষ্ট না হয়ে যায় সেকারণে এভাবেই বিক্রি করছি। আজ তালা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে বিক্রি করব। পিস পিস করে বিক্রি করছি যেন যার যেমন প্রয়োজন সে তেমন কিনতে পারেন। 

দামে কম পাওয়ায় অনেকেই আগ্রহী হয়ে কিনছেন বাবুল হোসেনের ইলিশ। তালা সদরের শিবপুর গ্রামের বাসিন্দা সেলিম সরদার ক্রেতাদের মধ্যে একজন। সেলিম সরদার জানান, তালা মাছ বাজারে এই ইলিশ বিক্রি হয় ৪০০-৫০০ টাকা প্রতি কেজি। অল্পদাম ও  মাছগুলো দেখে ভালো মনে হওয়ায় আমি এক কেজি কিনেছি।

সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মশিউর রহমান জানান, বর্তমানে ৫০০-৮০০ গ্রাম সাইজের ইলিশ বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকায়। ৮০০ গ্রামের ওপরে ও এক কেজির নিচে বিক্রি হচ্ছে ৯০০-৯৫০ টাকায়। এ ছাড়া এক কেজির ওপরের মাছের দাম আরও বেশি। তবে আগামী এক সপ্তাহের মধ্য দাম কমে যাবে। রোববার (২৫ জুলাই) থেকে সাগরে মাছ ধরা মৌসুম শুরু হয়েছে।

ফেরি করে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রির বিষয়ে মৎস্য কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, এটি মূলত সাগরের মাছ। সেকারণে কম দামে বিক্রি করতে পারছে। তা ছাড়া লকডাউনের মধ্যে ক্রেতা সংকটও রয়েছে। নষ্ট না করে ব্যবসায়ী হয়তো অল্প দামে বিক্রি করে দিচ্ছেন। তবে এই মাছের স্বাদ পদ্মার ইলিশের স্বাদের মতো হবে না।

আকরামুল ইসলাম/এসপি