এক মাস ধরে রেশন নিচ্ছে না ৩৭০০ রোহিঙ্গা পরিবার
কক্সবাজারের টেকনাফের নয়াপাড়ায় নিবন্ধিত শরণার্থী শিবিরের ৩৭০০ পরিবারের অন্তত ২২ হাজার রোহিঙ্গা এক মাস ধরে রেশন নিচ্ছে না। নির্দিষ্ট বিতরণ কেন্দ্রের আশেপাশে অবস্থান করলেও তারা রেশন নেয়নি বলে জানা গেছে।
ক্যাম্পের একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, ১ থেকে ২৯ জুলাই পর্যন্ত নিবন্ধিত শরণার্থী ক্যাম্পের ৩৭০০ পরিবারের ২২ হাজার রোহিঙ্গা তাদের রেশনের জন্য আসেনি। এসব রোহিঙ্গারা ১৯৯২ সালে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসে। তারপর তাদের শরণার্থী হিসেবে নিবন্ধন করে সরকার। এরপর বিভিন্ন সংস্থা ও সরকারের পক্ষ থেকে তাদের নানাভাবে সহযোগিতা করা হতো। ২০১৩ সাল থেকে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম) আওতায় তাদের খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছিল। এ জন্য ডব্লিউএফপির কর্মকর্তারা আলাদা করে তালিকা করে রোহিঙ্গাদের। কিন্তু চলতি জুলাই মাসের শুরু থেকে পুরাতন রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তার কার্ড নিয়ে নেয় সংস্থাটি। তারপর ২০১৭ সালে আসা নতুন রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সংযুক্ত করে কার্ড বিতরণ করে। কিন্তু ওই কার্ড নিয়ে আপত্তি জানিয়ে গত এক মাস ধরে রেশন নিচ্ছে না ক্যাম্পের পুরাতন রোহিঙ্গারা।
বিজ্ঞাপন
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক্যাম্পের একাধিক রোহিঙ্গা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ১৯৯২ সালে আমাদের বাংলাদেশ সরকার নিবন্ধিত করে। প্রতি মাসে এক-দুই বার রেশন পাই। খাদ্য সংস্থা থেকে যে কার্ড দেওয়া হয়েছে তা নিয়ে নতুনদের সঙ্গে মিলিয়ে আমাদের কার্ড দেওয়া হচ্ছে। আমরা সেই কার্ড নিচ্ছি না। পুরাতন কার্ডই চাই।
বিষয়টি স্বীকার করে টেকনাফের নয়াপাড়া নিবন্ধিত রোহিঙ্গা শিবিরের ক্যাম্প ইন-চার্জ (ক্যাম্প-২৫ নয়াপাড়া রেজিস্টার্ড ক্যাম্প) মো. আব্দুল মান্নান ঢাকা পোস্টকে বলেন, নিবন্ধিত ৩৭১২ পরিবার রেশন নেয়নি গত এক মাস। অনেকে আসতে চাইলেও বাকিরা বাধা দিচ্ছে। মূলত কার্ড নিয়ে তাদের আপত্তি। আরও বিস্তারিত জানতে ডব্লিউএফপির কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। নতুন পুরাতন মিলিয়ে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গার বসবাস কক্সবাজারের উখিয়া টেকনাফের ৩৪টি শিবিরে। এর মধ্যে কুতুপালং ও টেকনাফের নয়াপাড়া ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা নিবন্ধিত।
মুহিববুল্লাহ/এসকেডি