সাতক্ষীরায় তালার শিবপুর গ্রামে রুবেল মোল্লার (ইনসার্টে) বসতঘর

হঠাৎ যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে এক অসহায় পরিবারের ওপর। পরিবারটির এক সদস্যের দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে। জরুরি কিডনি প্রতিস্থাপন করা না গেলে রুবেল মোল্লাকে বাঁচানো সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। 

চিকিৎসকরা আরো জানিয়েছেন, রুবেলের সব মিলিয়ে চিকিৎসা ব্যয় হবে ৬-৭ লাখ টাকা। নিজেদের সর্বস্ব দিয়ে লাখ খানেক টাকা জোগাড় করার সামর্থ থাকলেও বাকি টাকা বের করার ক্ষমতা নেই পরিবারটির। এনিয়ে বিপাকে পড়েছেন পরিবারের সবাই।

রুবেল মোল্লা (২৪) সাতক্ষীরার তালা সদরের শিবপুর গ্রামের দিনমজুর মুজিবর মোল্লার ছেলে। তিনি মাঝিয়াড়া বাজারের ছোট্ট একটি পোল্ট্রি মাংসের দোকান আছে তার।

ঈদের আগের দিন (২০ জুলাই) রুবেলকে নেওয়া হয়েছে রাজধানীর শ্যামলী এলাকার সিকেডি হাসপাতালে। সেখানে ইউরোলজি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম, কিডনি ও ইউরোলজি বিশেষজ্ঞ ডা. তানভীর রহমানের তত্ত্বাবধানে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে চিকিৎসাধীন রুবেল।

রুবেল মোল্লার বাবা দিনমজুর মুজিবর রহমান মোল্লা জানান, ১৪ জুলাই (বুধবার) রুবেলের মুখ ফুলে যায়। প্রথমে তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ডা. আব্দুল্লাহ আল সোহান কিউনি ও লিভার পরীক্ষা করেন। তখনই কিডনি ও লিভারে সমস্যা ধরা পড়ে।

তিনি আরো বলেন, পরদিন খুলনার চিকিৎসক কুতুবউদ্দীন মল্লিককে দেখানো হলে তিনিও পরীক্ষা নিরীক্ষা করে একই সমস্যার কথা জানিয়ে বলেন, দুটি কিউনি নষ্ট হয়ে গেছে। লিভারের সমস্যা রয়েছে। দ্রুত ডায়ালাইসিস ও কিডনি পরিবর্তন করতে হবে বলে জানান ওই চিকিৎসক। 

তিনি বলেন, এরপর রুবেলকে ঢাকায় চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছে। চিকিৎসক জানিয়েছেন, চিকিৎসার জন্য ৬-৭ লাখ টাকা খরচ হবে। আমার মামা নজরুল ইসলাম এক লাখ টাকা দিয়েছেন সেই টাকায় চিকিৎসা চলছে এখন। আমি দিনমজুর মানুষ নিজেদের সর্বস্ব দিয়ে ৫০-৬০ হাজার টাকা জোগাড় করেছি। 

কান্নায় ভেঙে পড়েন রুবেলের মা আনোয়ারা বেগম। তিনি বলেন, প্রতিদিন ২৪০০-২৫০০ টাকা খরচ হচ্ছে। ছেলেকে বাঁচাতে হলে চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। আমাদের সামর্থ নেই। আমাদের পাশে দাঁড়ান আপনারা।

খুলনার চিকিৎসক মো. কুতুবউদ্দীন মল্লিক জানান, রুবেল মোল্লার দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। দ্রুত প্রতিস্থাপন করতে পারলে সুস্থ হওয়া সম্ভব। তবে চিকিৎসাটি ব্যয়বহুল। 

তালা সদর ইউপির ৭নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য সৈয়দ খায়রুল ইসলাম মিঠু জানান, পরিবারটি খুব অসহায়। আমি এক হাজার টাকা দিয়ে চিকিৎসা সহায়তা করেছি। সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম তিনিও এক লাখ টাকা দিয়েছেন। কিন্তু চিকিৎসার জন্য আরও টাকার প্রয়োজন। পরিবারটি কোনোভাবেই এত টাকা জোগাড় করতে পারবে না। হৃদয়বান মানুষদের রুবেলকে বাঁচাতে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান করছি।

তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার তারিফ উল হাসান জানান, পরিবারটি চিকিৎসা সহায়তা চেয়ে আবেদন করলে সেটি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সেখান থেকে আর্থিকভাবে সহায়তা পাবেন বলে আশাকরি।

পরিবারটির পাশে কেউ দাঁড়াতে চাইলে যোগাযোগ করা যাবে এই নম্বরে ০১৯৮৮৯৬৯৭৭৭ (রুবেল মোল্লা)।
 
আকরামুল ইসলাম/এমএএস