গত ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে আরও ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার (০২ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে মঙ্গলবার (০৩ আগস্ট) সকাল ৯টার মধ্যে করোনা আইসোলেশন ইউনিটে এরা মারা যান।

এই এক দিনে রাজশাহীর সাতজন, নাটোরের পাঁচজন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের চারজন, নওগাঁর দুজন এবং পাবনার একজন মারা গেছেন। এদের মধ্যে করোনায় সাতজন, সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে ১১ জন এবং করোনা নেগেটিভ হয়ে একজন মারা গেছেন।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় নাটোরের তিনজন, রাজশাহীর দুজন এবং নওগাঁর দুজন মারা গেছেন করোনা সংক্রমণে। করোনা সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন রাজশাহীর চারজন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের দুজন, নওগাঁর দুজন, নাটোরের দুজন এবং পাবনার একজন। করোনা নেগেটিভ সত্ত্বেও অন্যান্য শারীরিক জটিলতায় রাজশাহীর আরেকজন মারা গেছেন।

পরিচালক আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ তিনজন করে মারা গেছেন হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) ও ২৯/৩০ নম্বর ওয়ার্ডে। এ ছাড়া ৩, ১৪, ১৬, ১৭ ও ২২ নম্বর ওয়ার্ডে দুজন করে এবং কেবিন, ১ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে একজন করে মারা গেছেন।

মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ৫১৩ শয্যার রামেক করোনা আইসোলেশন ইউনিটে রোগী ভর্তি ছিলেন রাজশাহীর ১৭০ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৩২ জন, নাটোরের ৫৬ জন, নওগাঁর ৩৮ জন, পাবনার ৭১ জন, কুষ্টিয়ার আটজন, চুয়াডাঙ্গার ছয়জন, সিরাজগঞ্জের ছয়জন, মেহেরপুরের দুজন, বগুড়ার দুজন এবং ঝিনাইদহ জেলার একজনসহ মোট ৩৯২ জন। ২০ শয্যার আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন ১৯ জন।

এদের মধ্যে করোনা নিয়ে এ পর্যন্ত ভর্তি রয়েছেন ১৭৩ জন। এ ছাড়া উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ১৪৭ জন। করোনা ধরা পড়েনি হাসপাতালে ভর্তি ৭২ জনের নমুনায়। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৭ জন। এই এক দিনে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৩০ জন।

এর আগে সোমবার (০২ আগস্ট) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল ল্যাবে ১৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে করোনা ধরা পড়েছে ৬০ জনের নমুনায়। একই দিনে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে আরও ৩৬৭ জনের। এর মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৭৫ জনের। পরীক্ষার অনুপাতে রাজশাহীর ২৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৩৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ এবং নওগাঁর ১৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে।

প্রসঙ্গত, রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গত ১ আগস্ট ১৮ জন এবং ২ আগস্ট ১৫ জনসহ ৩৩ জন মারা যান। এর মধ্যে করোনায় ১৩ জন, করোনা সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে ১৫ জন এবং করোনা নেগেটিভ সত্ত্বেও অন্যান্য শারীরিক জটিলতায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়।

গত বছরের এপ্রিল থেকে এই বছরের জুলাই পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯ হাজার ৩৯ জন রোগী। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়ে গেছেন ২ হাজার ৫১১ জন। 

এই ১৫ মাসে মারা গেছেন ১ হাজার ৬০৯ জন। এর মধ্যে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৫২৬ জনের। অন্যদের মৃত্যু হয়েছে উপসর্গ নয়তো অন্যান্য শারীরিক জটিলতায়।

ফেরদৌস সিদ্দিকী/এসপি