বউভাতের অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে বজ্রপাতে ১৭ জনের মৃত্যু
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে বউভাতের অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে বজ্রপাতে ১৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বুধবার (০৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের দক্ষিণ পাঁকা গ্রামে নদীর ধারে এ ঘটনা ঘটে।
মৃতরা হলেন, নৌকার মাঝি রফিকুল, জমিলা (৫৮), তবজুল (৭০), আদল (৩৫), রফিকুল (৬০), লেচন (৫০), সজীব (২২), টকি বেগম (৩০), আলম (৪৫), পাতু (৪০), সহবুল (৩০), বেলি বেগম (৩২), বাবলু (২৬), মোছা. মোৗসুমী (২৫), টিপু সুলতান (৪৫), বাবু (২০) ও অসিকুল ইসলাম ডাকু (২৪)।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয় বাসিন্দা ও পাঁকা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন মাস্টার ঢাকা পোস্টকে জানান, সদর উপজেলার নারায়ণপুর থেকে বউভাতের অনুষ্ঠানে আসার পথে বৃষ্টি শুরু হলে নৌকার সবাই নদীর ধারে একটি অস্থায়ী ছাউনির নিচে আশ্রয় নেন। এ সময় সেখানে হঠাৎ বজ্রপাত শুরু হলে ঘটনাস্থলেই ১৫ থেকে ১৬ জনের মৃত্যু হয়। হাসপাতালে যাওয়ার পথে আরও কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানতে পেরেছি।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, মৃতদের মধ্যে ১৯ জন বউভাতের অনুষ্ঠানে যাওয়ার যাত্রী ছিলেন। এছাড়া মৃত আরেকজন দক্ষিণ পাকা গ্রামের নৌকার মাঝি ছিলেন। সব মিলে নৌকায় নারী-শিশু মিলে ৫৫ জন যাত্রী ছিলেন। তারা সবাই বৃষ্টি আসার পর নৌকা থেকে নেমে নদীর ধারে উঠে আসেন।
আহতদের শিবগঞ্জ উপজেলা কমপ্লেক্স ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। মৃতদের পরিচয় জানতে সুর্যনারায়ণপুরে পুলিশ সুপার এএইচএম আবদুর রাকিবসহ পুলিশের একটি দল গেছেন বলে জানান শিবগঞ্জ থানা পুলিশের ওসি ফরিদ হোসেন। স্থানীয়দের দাবি ২০ জন মারা গেছে। তবে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাকিব-আল-রাব্বী চূড়ান্তভাবে মৃতের সংখ্যা ১৭ জন জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে শিবগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ উদ্দিন জানান, নৌকাটি দক্ষিণ পাঁকা গ্রামের ঘাটে এসে পৌঁছার পরপরই বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। এতে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
তিনি বলেন, হাসপাতালে আহতদের আনা হচ্ছে। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে গুরুতর আহত এক শিশুকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শুনেছি শিশুটির বাবা-মা মারা গেছে। সবার নাম ও ঠিকানা সংগ্রহে পুলিশ কাজ করছে।
ফায়ার সার্ভিস চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্টেশনের উপ-পরিচালক সাবের আলী জানান, মৃত ও আহতদের নৌকায় করে সদর উপজেলার আলিমনগরের ঘাটে নিয়ে আসলে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তাদের হাসপাতালে ভর্তি করে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. কামরুন নাহার নাসু ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিকেল ৩টা পর্যন্ত হাসপাতালে মৃত ১২ জনকে আনা হয়। এছাড়াও আহত অবস্থায় আরও ৯ জনকে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে এক শিশুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
জাহাঙ্গীর আলম/এমএসআর/আরএআর/জেএস