শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে গাজীপুরের টঙ্গীর ক্রসলাইন নীট ফ্রেবিক্স লিমিটেড কারখানায় শ্রমিক বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের থামাতে গেলে শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ বাধে। এ ঘটনায় আট পুলিশ সদস্যসহ ১৫ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (০৫ আগস্ট) সকাল ১০টায় টঙ্গীর ভাদাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ৫৮ রাউন্ড শর্টগান, ২১ রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস ও তিন রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে। হতাহতদের টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।

আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন- এএসআই এমদাদুল হক, কনস্টেবল মেহেদী, সাব্বির, আশরাফুল, মারুফ, তমাল। আহত আনসার সদস্যরা হলেন- মোয়াজ্জেম হোসেন, রেজাউল করিম, মোহাম্মদ আলী মোল্লা। আহত শ্রমিকদের পরিচয় জানা যায়নি।

জানা যায়, কারখানার ১৬ জন শ্রমিককে ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে মঙ্গলবার (০৩ আগস্ট) থেকে কয়েকশ শ্রমিক বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি পালন করে আসছিল। বিষয়টি সমাধানের জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষ বুধবার সময় নির্ধারণ করে দেয়। কিন্তু বুধবার সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিলে বিষয়টি সমাধান না করায় দুপুরের পর শ্রমিকরা ফের বিক্ষোভ শুরু করে। পরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মালিক পক্ষ বিষয়টি সমাধান করবে বলে জানালে শ্রমিকরা বাড়ি ফিরে যায়। 

কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে এসে কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। এ সময় শ্রমিকরা কারখানার ২ নম্বর গেটের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে শিল্প পুলিশ শ্রমিকদের থামানোর চেষ্টা করলে পেছন থেকে শ্রমিকরা ইট-পাটকেল মারতে শুরু করে। এসময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে ৫৮ রাউন্ড শর্টগান, ২১ রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস ও তিন রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে পুলিশ।

কারখানার শ্রমিক শহিদুল ইসলাম জানান, ঈদের পর হঠাৎ কারখানা কর্তৃপক্ষ কয়েকজন শ্রমিককে ছাঁটাই করে। কিন্তু আমরা এই ছাঁটাই মানি না। বৃহস্পতিবার কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখে শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করলে পুলিশ অতর্কিত হামলা চালায়। এতে বহু শ্রমিক আহত হয়েছে।

কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী সিরাজুল ইসলাম বলেন, শ্রমিকরা কারখানার বেশ কয়েকজন স্টাফকে মারধর করেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কারখানাটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। 

শিল্প পুলিশের পরিদর্শক (টঙ্গী জোন) আব্দুল জলিল বলেন, শ্রম আইন ১৩ (১) অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে নোটিশ টানায়। সকাল থেকে কারখানার নিরাপত্তায় শিল্প পুলিশ মোতায়েন করা হয়। কিন্তু বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জোর করে কারখানার গেট ভাঙচুর করে ভেতরে প্রবেশ করতে চায়। এ সময় শ্রমিকদের বাধা দিলে তারা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে পুলিশের আট সদস্য আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কারখানার সামনে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

শিহাব খান/এসপি