‘ভোক্তা ও কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় চাল আমদানির সিদ্ধান্ত’
ভোক্তা ও কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় সরকার চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্যমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা সাধন চন্দ্র মজুমদার। তিনি জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে সরকারের চালের মজুদ ১৭ লাখ মেট্রিক টন।
বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) বগুড়ার আদমদিঘী উপজেলায় শান্তাহার সেন্ট্রাল স্টোরেজ ডিপো (সিএসডি) পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে খাদ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
চলমান বোরো সংগ্রহ অভিযানে ইতোমধ্যে সাড়ে ৮ লাখ টন চাল সংগ্রহ করা হয়েছে উল্লেখ করে সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, চাল সংগ্রহের সময় আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্যেই শতভাগ চাল সংগ্রহ হয়ে যাবে।
এ সময় খাদ্য গুদামে মানসম্মত চাল সংগ্রহের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, চালের মানের সঙ্গে আপোষ করা যাবে না।
বিজ্ঞাপন
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আগে দেশে বেসরকারিভাবে চাল আমদানি হতো শূন্য শতাংশ কর আরোপে। যে কেউ আমদানি করতে পারতো। এর ফলে বাজারে আমদানি করা চালের সরবরাহ বেশি ছিল। ফলে দামও কমে গিয়েছিল। এটার ফলে কৃষক কমদামে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছিল। পরে প্রান্তিক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ধান চাষে আগ্রহ হারিয়ে অন্য ফসলের চাষ শুরু করে।
মন্ত্রী বলেন, এখন কৃষক যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেটি নিশ্চিত করতে এবং আমদানি নিরুৎসাহিত করতে চাল আমদানিতে ৬২.৫ শতাংশ কর আরোপ করা হয়েছিল। মূল উদ্দেশ্য ছিল, কৃষককে ধান চাষে আবারও আগ্রহী করে তোলা এবং স্থানীয় সংগ্রহের মাধ্যমে খাদ্য মজুত বৃদ্ধি করা। বর্তমান সরকার এখন কৃষকের কাছ থেকে যৌক্তিক দামে ধান সংগ্রহ করায় কৃষকরা উপকৃত হচ্ছেন।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, দেশে খাদ্য উৎপাদনের পাশাপাশি ভোক্তাও বেড়েছে। চালের এখন হিউম্যান ও নন হিউম্যান ব্যবহার হচ্ছে। মোটা চালের বেশিরভাগ নন হিউম্যান খাতে ব্যবহার হয়, যা সাধারণত হিসাব করা হয় না। এছাড়াও প্রতিবছর জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, বিপুল সংখ্যক প্রবাস ফেরত এবং ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্যের সংস্থান করতে হচ্ছে। ফলে চালের বাজারে চাপ বাড়ছে।
তিনি আরও বলেন, চালের বাজার স্থিতিশীল করতে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। অবৈধ মজুদদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি বেসরকারিভাবে চাল আমদানির প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। শিগগির এর সুফল দৃশ্যমান হবে।
এর আগে খাদ্যমন্ত্রী স্থানীয় মিল মালিক, শ্রমিক ও খাদ্য অধিদফতরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের সঙ্গে খাদ্য সংগ্রহ পরিস্থিতি নিয়ে মত বিনিময় করেন।
অনুষ্ঠানে আদমদিঘী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার শ্রাবণী রায়, বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোতাহার হোসেন, আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক রাজশাহী জি এম ফারুক হোসেন পাটওয়ারী, নওগাঁ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আলমগীর কবীর, বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আশরাফ উজ্জামান এবং শান্তাহার সিএসডি ম্যানেজার দুলাল উদ্দিন খান উপস্থিত ছিলেন।
এমএইচএস