রংপুরের পীরগাছায় পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় স্বামী সাহেব আলীর বিরুদ্ধে স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পারিবারিকভাবে দফারফার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে গাঢাকা দিয়েছে অভিযুক্ত সাহেব আলী।

শুক্রবার (১৩ আগস্ট) ভোরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত হাজেরা বেগমের মৃত্যু হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) রাতে উপজেলার হাউদারপাড় নামক গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হাউদারপাড় গ্রামের মোন্নাফ মিয়ার ছেলে সাহেব আলীর সঙ্গে ১৫ বছর আগে হাজেরার বিয়ে হয়। তাদের সংসারে তিন কন্যাসন্তান রয়েছে। তবে ছেলেসন্তান না হওয়ায় স্ত্রীর সঙ্গে প্রায়ই সাহেব আলীর ঝগড়া হতো।

একপর্যায়ে সাহেব আলী ছেলেসন্তানের আশায় দ্বিতীয় বিয়ের জন্য স্ত্রীর অনুমতি চান। এতে হাজেরা বেগম সায় না দেওয়ায় তার ওপর দিনের পর দিন শারীরিক নির্যাতন বাড়তে থাকে। সম্প্রতি সাহেব আলী একাধিক পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। বিষয়টি জানাজানি  হলে হাজেরা তার স্বামীকে বাধা দেওয়ায় দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়।

এরই জের ধরে বৃহস্পতিবার রাতে স্ত্রী হাজেরা বেগমকে মারপিট করেন সাহেব আলী। এতে গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার ভোরে মারা যান ৩৬ বছর বয়সী হাজেরা।

পরিবারের দাবি হাজেরা বেগমকে পিটিয়ে হত্যা করেছে তার স্বামী সাহেব আলী। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে অভিযুক্ত সাহেব আলীর শাস্তির দাবি জানিয়েছে। 

নিহতের ছোট ভাই ফজর আলী জানান, তার বোন হাজেরা বেগমকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তারা পরিবারের পক্ষ থেকে আইনগত ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

রংপুর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের অধ্যাপক ডা. আসমাউল হুসনা লাশের ময়নাতদন্ত করেন। তিনি জানান, নিহত গৃহবধূর মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত থাকলেও তার মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনই বলা যাচ্ছে না। ফরেনসিক প্রতিবেদনের পর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে পীরগাছা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গৃহবধূ হাজেরা বেগমের মৃত্যু হয়। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এমএসআর