১৭ বছর বয়সী কিশোর মো. জুয়েল। সে সম্প্রতি লকডাউনের কারণে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ঢাকার এয়ারপোর্ট এলাকা থেকে সড়কপথে পায়ে হেঁটে গ্রামের বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ের উদ্দেশে রওনা হয়। কিন্তু একটানা পাঁচদিন হাঁটার পর পথ ভুল করে ঠাকুরগাঁওয়ের পরিবর্তে সে চলে আসে নেত্রকোনায়।

এদিকে শারীরিকভাবে অসুস্থ কিশোর জুয়েলকে উদ্ধার করে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পর বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) তাকে ঠাকুরগাঁও জেলার নিজ বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছে নেত্রকোনা মডেল থানা পুলিশ।

শুক্রবার (১৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় নেত্রকোনা মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাকের আহমেদের সঙ্গে কথা হলে তিনি ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

ওসি জানান, গত ৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১১টার দিকে কিশোর জুয়েল নেত্রকোনা মডেল থানার লক্ষীগঞ্জ ইউনিয়নের নসিবপুর বাজারে ঘোরাফেরা করছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দা সোহাগ রহমান নামে এক যুবক তাকে হাঁটতে দেখে পরিচয় জানার চেষ্টা করে।

তখন ওই কিশোর তাকে জানায়, লকডাউনে যানবাহন বন্ধ থাকায় গ্রামের বাড়ি ঠাকুরগাঁও যাওয়ার উদ্দেশে এয়ারপোর্ট থেকে পায়ে হেঁটে রওনা দেয়। একটানা পাঁচ দিন হাঁটার পর সে জানতে পারে যে, পথ ভুলে ঠাকুরগাঁওয়ের পরিবর্তে সে নেত্রকোনায় চলে এসেছে। রাস্তাঘাট ভালো করে জানাশোনা না থাকার কারণেই এমনটি হয়েছে বলেও তখন সোহাগ রহমানকে জানায় জুয়েল।

পরে সোহাগ রহমান ওই রাতে জুয়েলের পাশে দাঁড়ায় এবং পর দিন ৮ আগস্ট সকালে তাকে নেত্রকোনা মডেল থানায় নিয়ে গেলে ঘটনার বিবরণ শুনে পুলিশ জুয়েলকে তাদের হেফাজতে নেন। এ সময় জুয়েল শারীরিকভেবে অসুস্থবোধ করায় তাকে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে তার চিকিৎসাও করায় পুলিশ।

এদিকে ১১ আগস্ট থেকে গণপরিবহন চলাচল শুরু হলে নেত্রকোনা মডেল থানার ওসি ওই থানার নারী ও শিশু ডেস্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (এসআই) রাজিয়া আক্তারকে কিশোর জুয়েলের সার্বিক খোঁজখবর নিয়ে তার পরিবারের কাছে তাকে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব দেন।

পরে এসআই রাজিয়া জুয়েলের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে তাকে নিজ বাড়ি ঠাকুরগাঁও পৌঁছে দিতে তার যাতায়াত ও আনুষাঙ্গিক খরচসহ নেত্রকোনার শহরের বাসস্ট্যান্ড থেকে শামীম এন্টারপ্রাইজ নামে একটি বাসে উঠিয়ে দেন।

এ নিয়ে কথা হলে এসআই রাজিয়া আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, ১২ আগস্ট সকালে জুয়েল ঠাকুরগাঁও জেলার তাদের নিজেদের বাড়িতে নিরাপদে পৌঁছেছে বলে আমাদেরকে নিশ্চিত করেছে তার পরিবার।

জিয়াউর রহমান/এমএসআর