দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন সিরাজুল ইসলাম। হঠাৎ তার কানে আসে বিকট শব্দ। সঙ্গে সঙ্গেই দৌড়ে এসে দেখেন দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে ঢুকে গেছে যাত্রীবাহী বাসের সামনের অংশ। এ সময় বাসের ভেতরে হুড়োহুড়ি করছিল যাত্রীরা। পরে স্থানীয় কয়েকজনকে নিয়ে বাসের জানালা দিয়ে বের করেন আহতসহ অন্য যাত্রীদের।

ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ঘটা মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার ঘটনা প্রবাহ এভাবেই ঢাকা পোস্টের কাছে বর্ণনা করছিলেন সিরাজুল ইসলাম। 

তিনি বলেন, বাসের গেট বন্ধ থাকায় কেউ বের হতে পারছিলেন না। এ সময় বাসের ভেতরে থাকা যাত্রীরা হুড়োহুড়ি করছিলেন বের হওয়ার জন্য। পরে আমরা জানালার গ্লাস রড ভেঙে একজনকে ভেতরা ঢোকাই। পরে প্রথমে নারীদের ও পরে একে একে সবাইকে জখম বের করা হয়।

ওই বাসে থাকা আশিক নামের এক যাত্রী বলেন, চালকের আসনে মূল চালক ছিলেন না। একটি ছেলে দ্রুতগতিতে গাড়িটি চালাচ্ছিলেন। এ ব্যাপারে তাকে কয়েকবার সর্তকও করা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দুর্ঘটনার শিকার হতেই হলো। 

দুর্ঘটনার কারণ জানতে চাইলে ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইন উদ্দিন বলেন, বাসটির অনিয়ন্ত্রিত গতির পাশাপাশি ট্রাকটি মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকার কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। ট্রাকটি যেহেতু বিকল হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল, তাই বিষয়টি থানায় জানিয়ে রাখলে আমরা কোনো না কোনো ব্যবস্থা করতাম।

এর আগে শনিবার (১৪ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে উপজেলার বৈলর বড়পুকুরপাড় এলাকায় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটগামী ইমাম পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসটি গতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দেয়। এতে বাসটির সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে যায়।

এ সময় ঘটনাস্থলেই মারা যায় তিনজন এবং কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়। পরে আহতদের উদ্ধার করে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হলে মমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় আরও দুজন। এখন মমেক হাসপাতালে ১২ জন ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৪ জন চিকিৎসাধীন আছেন। বাকি ৪ জনকে স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়।

উবায়দুল হক/এনএ