আসামিদের আদালতে নেয়া হচ্ছে

কুষ্টিয়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় গ্রেফতার দুই মাদরাসা শিক্ষার্থী আবু বক্কর ওরফে মিঠুন (১৯) ও সবুজ ইসলাম ওরফে নাহিদের (২০) পাঁচদিনের রিমান্ড শেষে কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয়েছে।  

রোববার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুর ২টায় কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিবেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ। 

জানা গেছে, কুষ্টিয়া শহরের প্রাণকেন্দ্র পাঁচ রাস্তার মোড়ে (শাপলা চত্বর) বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশের দাবি অনুযায়ী মূল আসামি আবু বক্কর ওরফে মিঠুন (১৯) ও সবুজ ইসলাম ওরফে নাহিদের (২০) পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 

এর আগে গ্রেফতার ওই মাদরাসার দুই শিক্ষক আল আমিন (২৭) ও ইউসুফ আলীর (২৬) চারদিনের রিমান্ড শেষে শনিবার (১২ ডিসেম্বর) বিকালে আদালতে তোলা হয়েছিল। জবানবন্দি নেয়ার পর দুই শিক্ষককে কুষ্টিয়া জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কুষ্টিয়া মডেল থানার পরিদর্শক নিশিকান্ত সরকার জানান, রোববার (১৩ ডিসেম্বর) মাদরাসার দুই ছাত্র আবু বক্কর ওরফে মিঠুন ও সবুজ ইসলাম ওরফে নাহিদের পাঁচদিনের রিমান্ড শেষ হচ্ছে। এ দুই ছাত্রের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি চলছে। পুলিশের তিনজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে আটজন পুলিশ কর্মকর্তা আসামিদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। 

উল্লেখ্য, গত ৪ ডিসেম্বর কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে রাত ২টা ১৬ মিনিটে পাঞ্জাবি-পাজামা পরিহিত দুই মাদরাসা ছাত্র হেঁটে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের কাছে আসেন। এরপর ভাস্কর্যের গা ঘেঁষে থাকা মই বেয়ে ওপরে ওঠে পিঠে থাকা ব্যাগ থেকে হাতুড়ি বের করে প্রথমে বঙ্গবন্ধুর হাতের উঁচু তর্জনিতে আঘাত করেন। হাতুড়ি দিয়ে ভাস্কর্যের হাত ও পরে মুখের অংশে ভাঙচুর করেন তারা। প্রায় ৯ মিনিট পর ওই মই দিয়ে নেমে হেঁটে চলে যান তারা। পরে ঘটনাস্থলে থাকা সিসি টিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ। ৫ ও ৬ ডিসেম্বর প্রযুক্তির মাধ্যমে পুলিশ অভিযান চালিয়ে কুষ্টিয়ার জুগিয়া এলাকার মাদরাসা ইবনে মাসউদের (রা.) হেফজ বিভাগের দুই ছাত্র এবং তাদের সহযোগিতা করার জন্য দুই শিক্ষককে গ্রেফতার করে। 

এর আগে ৫ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে কুষ্টিয়া পৌরসভার সচিব কামাল উদ্দীন এ ঘটনায় বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেন।

৬ ডিসেম্বর এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি ড.খ মহিদ উদ্দিন। তিনি জানিয়েছিলেন, বিভিন্ন সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে প্রথমে দুই মাদরাসা ছাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। ভিডিও দেখে তারা ভাস্কর্য ভাঙা দুইজনকে চিনতে পারেন। পরবর্তীতে ওই দুই ছাত্রকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে মাদরাসার দুই শিক্ষক তাদের পালাতে সহযোগিতা করেছে।

এসপি