দৌলতদিয়ায় দীর্ঘ অপেক্ষায় ৭০০ গাড়ি
যানবাহনের তুলনায় ফেরি কম। ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পদ্মায় তীব্র স্রোতে ফেরি চলাচল হচ্ছে ব্যাহত। এ কারণে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ সাময়িকভাবে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রেখেছে। এসব কারণেই দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া প্রান্তে বেড়েছে যানবাহন পারাপার।
বুধবার (১৮ আগস্ট) প্রায় ৭০০ যানবাহন দৌলতদিয়া প্রান্তে অপেক্ষা করছে নদী পারের জন্য। দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করায় ভোগান্তি বেড়েছে দূরপাল্লার বাসের যাত্রী ও চালকদের। ভোগান্তির শেষ নেই ট্রাক চালক ও সহকারীদের। তাদের মধ্যে কেউ কেউ দুই দিন আগে এসেছেন ঘাট এলাকায়। আবার সঠিক সময়ে পণ্য ডেলিভারি না দিতে পারায় অনেকের অর্ডারও বাতিল হয়ে যাচ্ছে। অনেকের আবার জরিমানাও গুনতে হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
সরেজমিনে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় দেখা যায়, ফেরি পারের জন্য গোয়ালন্দ মোড়ে ও দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় অপেক্ষা করছে শত শত যানবাহন। এর মধ্যে রয়েছে দক্ষিণবঙ্গ থেকে আসা দূরপাল্লার বাস ও পণ্যবাহী ট্রাক, কার্ভাড ভ্যান, প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাস।
আরও দেখা যায়, দৌলতদিয়া ফেরিঘাট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার এলাকায় তৈরি হয়েছে প্রায় ৩০০ গাড়ির দীর্ঘ লম্বা লাইন। সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে থাকা এসব যানবাহনের মধ্যে দূরপাল্লার বাসের থেকে পণ্যবাহী ট্রাকের সংখ্যায় বেশি।
বিজ্ঞাপন
অন্যদিকে, দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় যানজট কমাতে ট্রাফিক পুলিশ ঘাটে আসা অপচনশীল পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে গোয়ালন্দ মোড়ে আটকে দিচ্ছে। ফলে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের গোয়ালন্দ মোড় থেকে আহ্লাদিপুর পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার এলাকায় প্রায় ৪০০ অপচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক ও কার্ভাড ভ্যানের দীর্ঘ সারি তৈরি হয়েছে।
ঘাট কর্তৃপক্ষ জানায়, রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে ফেরিস্বল্পতা আর ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে পদ্মায় তীব্র স্রোতে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথে ভারী যানবাহন পারাপারে নিষেধাজ্ঞার কারণে এখানে অতিরিক্ত চাপ পড়েছে।
কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, তারা যানজট নিরসনের জন্য কাজ করে যাচ্ছে এবং এই রুটে ফেরি সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তারা আবেদনও করেছে।
চুয়াডাঙ্গা থেকে দৌলতদিয়া ঘাটে আসা দিগন্ত পরিবহনের চালক সোহেল রানা বলেন, চুয়াডাঙ্গা থেকে রওনা হয়ে রাত ৩টায় দৌলতদিয়া ঘাটে এসে বাংলাদেশ হ্যাচারিজের সামনে সিরিয়ালে আটকে যায়। তারপর থেকে একটু একটু করে সামনের দিকে এড়োচ্ছি। এখনো ফেরিঘাট থেকে আধা কিলিমিটার দূরে আছি। কখন যে ফেরির নাগাল পাব, বুঝতে পারছি না।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. শিহাব উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, পদ্মার পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া পানি বাড়ায় রয়েছে তীব্র স্রোত। এই স্রোতে ফেরি চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। স্বাভাবিক সময়ের থেকে বেশি সময় লাগছে নদী পার হতে। অচিরেই সমস্যা সমাধান করা হবে।
মীর সামসুজ্জামান/এনএ