ভারত থেকে থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। উজানের পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাটের সব কটিই খুলে দিতে হয়েছে।

এতে তিস্তা নদীতীরবর্তী নীলফামারী জেলার ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়ে প্রায় ৮ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

শুক্রবার (২০ আগস্ট) সকালে তিস্তা নদীর দোয়ানী ব্যারেজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার পর বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও মধ্যরাত থেকে কমতে থাকে পানির প্রবাহ। এখানে নদীর বিপৎসীমা ৫২ মিটার ৬০ সেন্টিমিটার।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ডালিয়া ডিভিশনের বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, ভারতের সিকিমে বৃষ্টিপাত হওয়ায় তিস্তায় পানি বেড়েছে। ফলে তিস্তা নদীবেষ্টিত ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের মানুষ পড়েছে চরম বিপাকে। অনেকের বাড়ির চুলাসহ আশপাশ ডুবে গেছে। এতে রান্না করা বন্ধ হয়ে গেছে।

ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান জানান, ছাতুনামা, ভেন্ডাবাড়ি, কেল্লাবাড়ির চরের প্রায় ৬০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তারা ঠিকমতো রান্না করতে না পারায় খাদ্য সমস্যায় পড়েছে। ইউপি থেকে আমরা তাদের শুকনা খাবার দিয়েছি। কয়েকটি পরিবারকে উঁচু স্থানে নিয়ে আসা হয়েছে।

খালিশা চাপানী ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান সরকার বলেন, বাইশপুকুর ও ছোটখাতা চরের প্রায় ৩০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এলাকাগুলো নদী-সংলগ্ন হওয়ায় নদীতে পানি বাড়লেই তারা পানিবন্দি হয়ে পড়ে। তাদের অনেকেই এখন তিস্তা ব্যারাজের কলম্বিয়া বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে।

ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জয়শ্রী রানী রায় বলেন, পানিবন্দি ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের মানুষদের জন্য ছয় মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে চাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করা হবে।

তিনি জানান, প্লাবিত এলাকাগুলো পরিদর্শন করছি। যেখানে প্রয়োজন হবে, সেখানে আমরা সরকারি সহায়তা পৌঁছে দেব। তবে মানুষজন যাতে নিরাপদে থাকে, সে জন্য সতর্ক অবস্থায় রয়েছি।

উল্লেখ্য, তিস্তা নদীবেষ্টিত ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, নাউতারা, খালিশা চাপানি, ঝুনাগাছ চাপানি, খগাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি এবং জলঢাকা উপজেলার ডাউয়াবাড়ি, শৌলমারী, গোলমুন্ডা ও কৈমারী ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের মানুষরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

মাহমুদ আল হাসান রাফিন/এনএ