দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার আব্দুলপুর পুতুল গ্রামে পরিণত হয়েছে। এ গ্রামের ৫০০ নারী পুতুল তৈরি করে বর্তমানে স্বাবলম্বী। তাদের তৈরি সুতার পুতুল দেশ-বিদেশে সমাদৃত হচ্ছে।

ওই গ্রামে গিয়ে জানা যায়, চার বছর আগে এবি ক্রুসেড নামে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে মনিকা রানী দাস পুতুল তৈরির ধারণা নিয়ে কাজ শুরু করেন। সংসারের কাজের ফাঁকে পুতুল তৈরি করে ওই প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করতেন। পারিশ্রমিক হিসেবে পুতুল প্রতি বিভিন্ন অংকের টাকা পেতেন। এতে মনিকার সংসারে অতিরিক্ত আয় হতে থাকে। তার দেখাদেখি এলাকার অন্য নারীরা পুতুল তৈরিতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। বর্তমানে ওই গ্রামে দুইজন সুপারভাইজারের আওতায় ৫০০ নারী পুতুল তৈরি করছেন।

আব্দুলপুর বানিয়া পাড়া গ্রামের লিপা রায় ঢাকা পোস্টকে জানান, আমি দুই বছর ধরে সুতার পুতুল তৈরি করছি। আমার প্রতিবেশী মনিকা দিদির কাছ থেকে এ কাজ শিখছি। সংসারের কাজের পাশাপাশি প্রতিদিন ২-৫ টা পুতুল তৈরি করি। পুতুলের টাকা দিয়ে সংসার খরচ চালানোর পাশাপাশি ছাগল কিনছি। ছেলে-মেয়েদের চাহিদা পূরণ করতে পারছি। 

একই গ্রামের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী ভাইগ্য রানী রায় ঢাকা পোস্টকে জানায়, আমি এসএসসি পরীক্ষার পর মায়ের কাছে পুতুল তৈরির কাজ শিখছি। পড়াশোনার পাশাপাশি পুতুল তৈরি করি। পুতুল তৈরির টাকা দিয়ে প্রাইভেটের বেতন দেই।বাবার কাছ থেকে কোনো টাকা নিতে হচ্ছে না।

সুপারভাইজার ললিতা রানী রায় ও ঝর্না রানী রায় ঢাকা পোস্টকে বলেন, এবি ক্রুসেড প্রথমে বিভিন্ন ধরনের পুতুলের নমুনাসহ সুতা ও তুলা সরবরাহ করে। সেই নমুনা আমরা কারিগরদের দেয়। তারপর চাহিদা অনুযায়ী পুতুল তৈরি করে এবি ক্রুসেডে সরবরাহ করি। 

তারা আরও বলেন, প্রতিটি পুতুল তৈরির জন্য ১৫-৬৫ টাকা পর্যন্ত দেওয়া হয়। একজন কারিগর সংসারের কাজ করে দিনে তিনটি পুতুল তৈরি করতে পারে।

এবি ক্রুসেডের স্বত্বাধিকারী মোয়াজ্জেম হোসেন মিজু ঢাকা পোস্টকে বলেন, চিরিরবন্দরে বর্তমানে দুইজন সুপাইভাইজারের আওতায় প্রায় ৫০০ নারী পুতুল তৈরি করে বাড়তি আয় করছেন। তাদের তৈরি পুতুল দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আমেরিকা, ইংল্যান্ড, জার্মানিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রফতানি হয়ে থাকে।

এসপি