পার্বত্য এলাকার জনপ্রিয় একটি সবজি বাঁশের চারা বা বাঁশ কোড়ল। স্বাদ ও পুষ্টি গুণের কারণে শুধু পাহাড়ে নয়, দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এই সবজি। জুন-আগস্ট পর্যন্ত তিন মাস বাঁশের প্রজনন মৌসুম। বাঁশের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ সময় বাঁশ কোড়ল সংগ্রহ বা বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও পাহাড়ে বিক্রি হচ্ছে বাঁশ কোড়ল।

জানা গেছে, বান্দরবানের রুমা, থানচি, রোয়াংছড়িসহ জেলা শহরের মার্মা বাজার, মধ্যমপাড়া, কালাঘাটা, বালাঘাটাসহ স্থানীয় প্রতিটি বাজারে এখন বিক্রি হচ্ছে বাঁশ কোড়ল। খেতে সুস্বাধু এবং দাম কম হওয়ায় দিন দিন পাহাড়ি-বাঙালিসহ সব শ্রেণির মানুষের কাছে সবজি হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই বাঁশ কোড়ল। চাহিদা থাকায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলেও চলে যাচ্ছে পার্বত্য এলাকার এ সবজিটি।

জুন-আগস্ট এই তিন মাস বাঁশ প্রজননের প্রধান সময়। এই মৌসুমে এক একটি বাঁশগুচ্ছে ১০-৮০টি বাঁশ গাছ একত্রে দেখা যায়। এসব গুচ্ছকে বাঁশঝাড় বলা হয়। ঘর-বাড়ি নির্মাণ ও কাগজ উৎপাদন থেকে শুরু করে বিভিন্ন আসবাবপত্র, কুটির শিল্প তৈরিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাঁশের অবদান অনস্বীকার্য। এক কথায় মানুষের জীবনে বাঁশের প্রয়োজন দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত। এ বাঁশকে গরিবের গজারি বলে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। কিন্তু স্থানীয় বন বিভাগের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না থাকায় দিন দিন বেড়েই চলছে বাঁশ নিধন তৎপরতা। 

খুচরা বিক্রেতা মাসুদ বলেন, কক্সবাজারে বাঁশ কোড়লের চাহিদা রয়েছে। আমরা বান্দরবান থেকে প্রতি পিস ৩ টাকা করে কিনে ৫ টাকা করে বিক্রি করি। বাঁশ কোড়ল বিক্রি করে প্রতিদিন ৬০০-৭০০ টাকা আয় হচ্ছে।

জুমচাষি হ্লাচিংনু বলেন, বাঁশ কোড়ল সংগ্রহ করে আমরা বাজারে বিক্রি করি। এই টাকা দিয়ে আমাদের সংসারের খরচ, বাচ্চাদের পড়া-লেখার খরচ বহন করি।

জেলার তারাছা মৌজা হেডম্যান উনিহ্লা মার্মা বলেন, নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত যদি আমরা সংরক্ষণ করতে পারি তাহলে বাঁশ উৎপাদন ঠিক রাখা যাবে।

বান্দরবান বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ফরিদ মিয়া বলেন, জুন-আগস্ট পর্যন্ত তিন মাস বাঁশের প্রজনন মৌসুম। এ সময় বাঁশ কর্তন বন্ধ ও আহরণের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকে। বন বিভাগ এ সময় কাউকে বাঁশ কোড়ল আহরণ করতে দেয় না। অবৈধভাবে যদি কেউ বিক্রি করেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রিজভী রাহাত/এসপি