রাজবাড়ীতে পানিবন্দি হাজার হাজার মানুষ
রাজবাড়ীতে পদ্মা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া পয়েন্টে পানি বেড়ে বিপৎসীমার ওপরে রয়েছে। সোমবার (২৩ আগস্ট) সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজবাড়ীর তিনটি পয়েন্টের মধ্যে গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া পয়েন্টে পানি তিন সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৫১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া পাংশা সেনগ্রাম পয়েন্টে ৬ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৭৩ সেন্টিমিটার ওপরে রয়েছে। তবে সদরের মাহেন্দ্রপুরে পানি অপরিবর্তিত রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এদিকে পানি বৃদ্ধির কারণে জেলার সদর, গোয়ালন্দ, কালুখালী, বালিয়াকান্দি ও পাংশা উপজেলার প্রায় সাত হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। পানি বাড়ার ফলে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ও কালিকাপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চলের মানুষ। একই সঙ্গে চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে গবাদি পশুর খাদ্য সঙ্কট। নষ্ট হয়েছে বীজতলাসহ বিভিন্ন ফসল ও সবজি ক্ষেত।
রতনদিয়া ইউনিয়নের হরিণবাড়িয়া চরাঞ্চলে গিয়ে দেখা যায়, এখানকার প্রায় ৪ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। বেশ কয়েকটি রাস্তা পানিতে প্লাবিত হওয়ায় নৌকায় যাতায়াত করছেন স্থানীয়রা।
বিজ্ঞাপন
কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের হরিণবাড়ীয়া গ্রামের গৃহবধূ রোকসানা খাতুন বলেন, বন্যায় আমাদের ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। চুলায় আগুন জ্বালানোর মতো কোনো জায়গা নেই। এ জন্য শুকনো খাবার খেয়ে থাকতে হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কেউ সহায়তা করতে আসেনি।
কালুখালীর রতনদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসিনা পারভীন নিলুফা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার ইউনিয়নের কয়েক হাজার পরিবার প্রতি বছর এ মৌসুমে পানিবন্দি হয়। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে সাহায্য করবেন বলে জানিয়েছেন।
রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, পদ্মা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে জেলার কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। আমাদের তালিকা প্রস্তুত প্রায় শেষ পর্যায়ে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের সহায়তা করা হবে।
রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবদুল আহাদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। আরও ২-৩ দিন পানি বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকে পানি আবার কমতে শুরু করবে। পানি কমলেও নদীভাঙনের আশঙ্কা করা যাচ্ছে।
রাজবাড়ী জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সৈয়দ আরিফুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ বছর বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা নেই। আগামী সপ্তাহ থেকে পানি কমতে শুরু করবে। তবে এখন পদ্মার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় নিম্নাঞ্চল ও বেড়িবাঁধের পাশের নিচু এলাকাগুলএত পানি উঠেছে। এতে জেলার কয়েকটি গ্রামের প্রায় ৭ হাজার পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। পানিবন্দি পরিবারের জন্য ৩০ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। জরুরি সেবা ৩৩৩ নম্বরে কেউ ফোন করলেও তাদের বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেওয়া হবে।
মীর সামসুজ্জামান/এসপি