বগুড়ার কাহালুতে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে আব্দুর রাজ্জাক (৪৯) নামে এক ব্যক্তির ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে বগুড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক নুর মো. শাহরিয়ার কবির এ রায় দেন। তবে আসামি আব্দুর রাজ্জাক পলাতক রয়েছেন। 

আব্দুর রাজ্জাক কাহালু উপজেলার গোয়ালপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তার স্ত্রীর নাম এলেমা বিবি। ২০০৭ সালের ২৪ ডিসেম্বরে নিজ বাড়িতে সকাল ৭টা থেকে ৮টার দিকে এলেমাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়।

ফাঁসির আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক সুব্রত ব্যানার্জি বলেন, ২০০৮ সালের ২১২ নম্বর মামলায় আসামিকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন বগুড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, আব্দুর রাজ্জাক তার প্রথম স্ত্রী এলেমা বিবিকে ৪০ হাজার টাকা যৌতুকের জন্য নির্যাতন করতেন। নির্যাতনের একপর্যায়ে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে একটি অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা দায়ের করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে শ্বাসরোধের বিষয়টি উঠে আসায় নিহতের বড় ভাই আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০০৮ সালের ৩ মার্চ মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পুলিশকে দেওয়া হয়। এ মামলায় ছয়জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল।

পুলিশ প্রাথমিক তদন্তের পর ওই বছরের ১৩ জুলাই চার্জশিট গঠন করে আদালতে জমা দেয়। চার্জশিটে আব্দুর রাজ্জাক ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী মনোয়ারা বেগমকে অভিযুক্ত করা হয়। সেই মামলায় শুনানি চলছিল। মামলায় আসামি আব্দুর রাজ্জাক জামিন নিয়ে পলাতক ছিলেন।

পরে দীর্ঘ শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার সকালে বগুড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক নুর মো. শাহরিয়ার কবির ফাঁসির রায় ঘোষণা করেন। আর অপর অভিযুক্ত মনোয়ারা বিবিকে খালাস দেন।

বগুড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আশেকুর রহমান সুজন বলেন, এলেমা বিবিকে শ্বাসরোধ করে হত্যার বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। ময়নাতদন্তেও একই বিষয় উঠে এসেছে। হত্যার দায়ে বিচারক আসামিকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন। আর আসামির দ্বিতীয় স্ত্রীকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

সাখাওয়াত হোসেন জনি/আরএআর