ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রলারডুবি
ডাক্তার দেখাতে গিয়ে প্রাণ গেল মা-মেয়ের
স্ত্রী ফরিদা আক্তার (৪০) ও মেয়ে মুন্নিকে (৮) বাড়ির পাশের নৌকাঘাট থেকে বিকেলে ট্রলারে তুলে দেন জজ মিয়া। শুক্রবার (২৭ আগস্ট) রাতে আত্মীয়ের বাড়িতে থেকে আজ সকালে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার কথা ছিল তাদের। কিন্তু ডাক্তার না দেখিয়েই রাতেই লাশ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন তারা।
শনিবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে বাড়ির পাশে কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে তাদের। এখন নিহতদের বাড়িতে এখন চলছে মাতম। স্ত্রী আর ছোট্ট মেয়েকে হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন জজ মিয়া।
বিজ্ঞাপন
নিহত ফরিদা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর ইউনিয়নের গেড়াগাঁও গ্রামের জজ মিয়ার স্ত্রী ও মুন্নি তার মেয়ে।
শুক্রবার বিকেল সোয়া ৫টায় লইসকা বিলে বালুবাহী ট্রলারের সঙ্গে সংঘর্ষে অপর যাত্রীবোঝাই ট্রলার ডুবে যায়।
যাত্রীবোঝাই ট্রলারডুবির ঘটনায় শনিবার (২৮ আগস্ট) দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ফরিদা ও মুন্নি (৮) রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
ফরিদার স্বামী জজ মিয়া বলেন, আমার স্ত্রীর কোমরে ব্যথা। শনিবার সকালে ডাক্তার দেখানোর কথা ছিল। আমি নিজে তাদের ট্রলারে তুলে দিয়েছিলাম। রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে এক আত্মীয়র বাসায় থেকে সকালে ডাক্তার দেখানোর কথা ছিল। ট্রলারটিতে অতিরিক্ত যাত্রী ছিল। এ কারণেই ট্রলারটি ডুবেছে।
ট্রলারডুবে ওই গেড়াগাঁও গ্রামের আরও দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন মৃত মালু মিয়ার স্ত্রী মঞ্জু বেগম (৬২) ও আব্দুল হাসিমের স্ত্রী কমলা বেগম (৬৫)।
মায়ের জন্য বিলাপ করতে করতে মঞ্জু বেগমের মেয়ে মৌসুমি আক্তার বলেন, ‘আমার নানু অসুস্থ, সেজন্য আমার চাচি কমলাকে নিয়ে নানুর বাড়ি যাচ্ছিল মা। ভাতার জন্য কয়েকদিন আগে মা ছবি তুলেছিলেন। সেই আমার কাছে দিয়ে বলেছিলেন বাবার ছবির সঙ্গে ছবিটা বাঁধিয়ে রাখার জন্য। আমি তখন বুঝতে পারিনি আমার মা এভাবে ছবি হয়ে যাবে।’
ট্রলারডুবির ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রুহুল আমিনকে প্রধান করে করা তদন্ত কমিটিকে ১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
আজিজুল সঞ্চয়/এমএসআর