মুন্সিগঞ্জের হিমাগারগুলোতে ৯-১০ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হচ্ছে। অথচ আলু উৎপাদন এবং হিমাগারে সংরক্ষণ করতে কৃষকের খরচ হচ্ছে ২০ টাকা কেজি। ফলে আলু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষক।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, মুন্সিগঞ্জে এ বছর ৩৭ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়। এতে উৎপাদন হয়েছিল প্রায় ১৩ লাখ টন। এর মধ্যে কৃষকরা সাড়ে ৫ লাখ টন আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করেন।

বর্তমানে হিমাগারে আলু পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৯-১১ টাকা কেজি দরে। অথচ আলু উৎপাদন ও হিমাগারে সংরক্ষণ খরচ মিলে কেজি প্রতি খরচ হয়েছে ১৮-২০ টাকা। অর্থাৎ পাইকারি পর্যায়ে কেজি প্রতি চাষিদের লোকসান গুনতে হচ্ছে ৯-১১ টাকা। অথচ খুচরা বাজারে কেজি প্রতি আলু বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকা দরে। পাইকারি বাজারের সঙ্গে খুচরা বাজারে পার্থক্য ১১-১৫ টাকা। মূলত মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে এ অবস্থা হচ্ছে বলে অভিযোগ কৃষকদের।

বিপ্লব শেখ নামে এক আলু চাষি জানান, বর্তমানে ৫০ কেজি আলুর বস্তা ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ আলু উৎপাদন এবং হিমাগারের ভাড়া নিয়ে ৫০ কেজি আলু রাখতে খরচ পড়েছে প্রায় ১০০০ টাকা।

আরেক কৃষক নওশাদ আলম বলেন, গত বছর আলুর দাম ভালো পাওয়ায় এ বছর উচ্চ দামে জমি লিজ নিয়ে আবাদ করেছিলাম। কিন্তু এ বছর আলুর দাম অনেক কম হওয়ায় বিরাট অঙ্কের লোকসান গুনতে হবে। আগামী বছর আলুর চাষ করার মতো পুঁজি থাকবে না ‌।

আলু ব্যবসায়ী হারুনুর রশীদ জানান, গত বছর যে পরিমাণ আলু হিমাগারে রাখা হয়েছিল এ বছর তার চেয়ে বেশি আলু মজুদ আছে। অথচ দুই মাস হলো হিমাগার খুলেছে‌। হিমাগারে এখন আলু বিক্রিও অন্যান্য বছরের তুলনায় কম‌। এ বছর এতো আলু বিক্রি হবে কি না তা নিয়ে শঙ্কায় আছি‌।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপতরের উপ-পরিচালক মো. খুরশীদ আলম বলেন, এ বছর আলু উৎপাদন চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি হয়েছে। আলুর যদি বিকল্প ব্যবহার না বাড়ানো যায়, তবে আলুর দাম পড়ে যাবে। এটাই স্বাভাবিক।

ব.ম শামীম/এসপি