নাছির উদ্দিন সৌদিপ্রবাসী। ছুটিতে এসেছেন বাড়িতে। সৌদি আরবে নিজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ফিরতে হবে, এ জন্য তিনি ৩০ আগস্ট সহোদর ছোট ভাই নাফিসকে নিয়ে করোনার টিকা নিতে ঢাকায় যান। ৩১ আগস্ট টিকা গ্রহণ শেষ করে বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) ভোরে দুই ভাই মোটরসাইকেলে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। কিন্তু কে জানত এ যাত্রাই হবে তাদের শেষ যাত্রা?

পথে মানিকগঞ্জের বাথুলী নামক স্থানে পাটুরিয়াগামী একটি যাত্রীবাহী বাসের চাপায় থেমে যায় দুই ভাইয়ের স্বপ্ন, নিথর হয় তাজা দুটি প্রাণ। এদিকে একসঙ্গে দুই ভাইয়ের মৃত্যুতে স্তব্ধ পুরো গ্রামবাসী। তাদের নিহত হওয়ার খবর গ্রামে পৌঁছানোমাত্রই পরিবারে ও এলাকায় শুরু হয় শোকের মাতম।

ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার কাঁচেরকোল ইউনিয়নের উত্তর মির্জাপুর গ্রামের মৃত আবুল কালাম আজাদের বড় ছেলে নাছির উদ্দিন জোয়ার্দ্দার (৪৫) ও ছোট ছেলে ওয়াজি উল্লাহ নাফিস জোয়ার্দ্দার (২৭)। নাফিস ভারতে দিল্লির একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে সবে এমবিএ শেষ করে এসেছেন।

মির্জাপুর গ্রামের ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য নরুম্মান জোয়াদ্দার ঢাকা পোস্টকে জানান, নিহত নাছির ও নাফিস বুধবার সকালে ঢাকা থেকে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফরছিলেন। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বাথুলি এলাকায় পৌঁছালে পাটুরিয়াগামী একটি বাস তাদের চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।

নিহতদের ভগ্নিপতি মোশারফ হোসেন ঢাকা পোস্টকে জানান, সৌদি আরবে নিজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ফিরতে হবে, এ জন্য তিনি ৩০ আগস্ট ছোট ভাই নাফিসকে নিয়ে করোনার টিকা নিতে ঢাকায় যায় নাছির। ফেরার পথে বাসের চাপায় দুই ভাই নিহত হয়। এতে পরিবারের সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেল।

কাঁচেরকোল ইউপির চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন জোয়ার্দ্দার মামুন ঢাকা পোস্টকে জানান, এক পরিবারে দুই সদস্য, তাও দুই ভাইয়ের একসঙ্গে মৃত্যু। এটা বড়ই বেদনাদায়ক। এলাকার মানুষকে কাঁদিয়ে তারা চলে গেলেন। তা ছাড়া একটি পরিবারের যে কত ক্ষতি হয়ে গেল, তা বোঝানো সম্ভব নয়।

শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহাঙ্গীর আলম ঢাকা পোস্টকে জানান, আপন দুই ভাইয়ের মৃত্যুর এমন কোনো খবর তাদের জানা নেই। মানিকগঞ্জ থেকে এ ধরনের কোনো দুর্ঘটনার তথ্য তাদের জানানো হয়নি। তবে খোঁজ নেওয়া হবে।

আব্দুল্লাহ আল মামুন/এনএ