কুড়িগ্রামে এ বছর দীর্ঘমেয়াদি বন্যায় জেলার ৯টি উপজেলায় প্রায় ২৭ হাজার হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসলি আবাদ বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে কৃষকরা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছেন। বিশেষ করে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার অববাহিকার কৃষকরা।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর বন্যায় জেলায় ২৬ হাজার ৪০৫ হেক্টর জমির রোপা আমন, ২৮৫ হেক্টর জমির বিভিন্ন সবজি খেত ও বীজতলা ১৫৫ হেক্টর। তবে কৃষি বিভাগ পূর্ণাঙ্গ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারিনি।

মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে ধরলা, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি এখন বিপৎসীমার নিজ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের মিল পাড়া গ্রামের কোরবান আলী বলেন, তিন বিঘা জমিতে আমন আবাদ করেছি। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি বন্যায় সব পচে গেছে। কীভাবে কী করব বুঝতে পারছি না। এখন তো সময় নাই, বীজতলাও নাই। কীভাবে এখন ফসল আবাদ করব?

ওই ইউনিয়নের কৃষক দেলোয়ার মিয়া বলেন, আমার পাঁচ বিঘা জমির আমন খেত এখনো তলিয়ে আছে। তবে দুদিনের মধ্যে পানি নেমে গেলেও আর আবাদ হবে না। এবার যে ধরাটা খেলাম, কাটিয়ে উঠতে পারব না। পানি নেমে গেলে নাহয় আবার ধান রোপণ করতাম। কিন্তু বীজতলা তো নাই। সব মিলিয়ে খুবই সমস্যায় আছি।

পাঁচগাছী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো দেলোয়ার হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, নদ-নদীর পানি তো কমতেছে। কিন্তু এখনো আমার ইউনিয়নে আমন খেত পানিতে তলিয়ে আছে। সব মিলিয়ে প্রায় ১ হাজার ৫০০ হেক্টর বিভিন্ন ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে আমন আবাদ ১ হাজার হেক্টর ও অন্যন্য ফসল ৫০০ হেক্টর হবে।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মন্জুরুল হক ঢাকা পোস্টকে জানান, কুড়িগ্রামে এবার বন্যায় রোপা আমন, সবজি ও বীজতলা মিলে প্রায় ২৭ হাজার হেক্টর বিভিন্ন ফসল ১৬ থেকে ১৭ দিন পানিতে নিমজ্জিত ছিল।

জেলায় কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, আমরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে এ তথ্য পাঠিয়েছি। তা ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করা হচ্ছে। তাদের ক্ষতিপূরণের বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

মো. জুয়েল রানা/এনএ