লালমনিরহাটের দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা তিন বিঘা করিডোরের রাস্তার দুই পার্শ্বে আলোচনা ছাড়াই বিএসএফ সদস্যের উঁচু দেয়াল নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিয়েছে বিজিবি। এ ঘটনায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে (বিজিবি) ধন্যবাদ জানিয়েছে এলাকাবাসী।

বিজিবি প্রতিবাদ করলে বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বিএসএফ সদস্যরা নির্মাণকাজ বন্ধ রাখেন। বিজিবির দাবি, কোনো আলোচনা ছাড়াই বিএসএফ বাংলাদেশিদের চলাচলের একমাত্র সড়কটির দুই পাশে দেয়াল নির্মাণকাজ শুরু করেন। ওই দেয়ালের কারণে চলাচলে যেমন সমস্যা সৃষ্টি হবে। তেমনি দুর্ঘটনাও বেড়ে যাবে।

জানা গেছে, পাটগ্রাম উপজেলার কুচলিবাড়ি ইউনিয়নের পানবাড়ি এলাকা থেকে দহগ্রাম ইউনিয়নের ভূখণ্ড পর্যন্ত করিডোর সড়কটির দৈর্ঘ্য ১৭৮ মিটার ও প্রস্থ ৮৫ মিটার। সড়কটি ২৪ ঘণ্টা ব্যবহারের জন্য ২০১১ সালের ১৯ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুলে দেন।
তখন থেকে একটানা সড়কটি ব্যবহৃত করছেন বাংলাদেশের লোকজন।

ওই সময় সিদ্ধান্ত হয় তিনবিঘা করিডোরে যেভাবে থাকছে কোনো পরিবর্তন করা যাবে না। কিন্তু কয়েকদিন আগে তিনবিঘা করিডোর ভারতীয় অংশে ইট, বালু, সিমেন্টসহ নির্মাণসামগ্রী এনে রাখেন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। দুই দেশের মধ্যে কোনো প্রকার আলোচনা ছাড়াই ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ১৪ থেকে ১৫ জন নির্মাণশ্রমিক করিডোর সড়কের দুই পাশে গর্ত খনন করেন।

পরে বিজিবি সদস্যের কাছে যোগাযোগ করে স্থানীয়রা। ৫১ বিজিবি পানবাড়ি কোম্পানি কমান্ডার জাহাবুল ইসলাম গর্ত করার কারণ চানতে চান বিএসএফের কাছে। তারা বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সড়কটি সংস্কার ও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করা হচ্ছে। এতে পথচারীদের চলাচলে কোনো সমস্যা হবে না।

তিনি আরও জানতে চান, করিডোর সড়কের পূর্ব-দক্ষিণ দিকে তিন ফুট উঁচু দেয়াল নির্মাণকাজ শুরু কেন করেছেন? সেটির কোনো জবাব দেননি তারা। বিষয়টি বুঝতে পেরে কাজে বাধা দেয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ। পরে কাজ বন্ধ করে বিএসএফ।

দহগ্রামের বাসিন্দা আলী মাহমুদ বলেন, স্থল সীমান্ত চুক্তি কার্যকরের পর বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহলগুলো বিনিময় হলেও দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা করিডোর আগের মতো থাকার কথা। কিন্তু হঠাৎ করে বিএসএফ যেভাবে দেয়াল নির্মাণ করছে এতে সড়কটি আরও চিকন হতো। মানুষের চলাচলে সমস্যা হবে।

দহগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন প্রধান বলেন, তারা যেভাবে দেয়াল নির্মাণ করছিলেন তাতে মানুষের চলাচলে সমস্যা হতো। স্থানীয় জনগণসহ বিজিবির বাধায় কাজটি বন্ধ করে দিয়েছে বিএসএফ।

৫১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পানবাড়ি কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার জাহাবুল ইসলাম বলেন, ভারতীয় নির্মাণশ্রমিকদের দিয়ে রাস্তার দুই পাশে সংস্কারের নামে দেয়াল নির্মাণ করা হচ্ছিল। পরে আমরা সবাই গিয়ে বাধা দিয়ে কাজ বন্ধ করছি।

৫১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল ইসহাক আলীর সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

নিয়াজ আহমেদ সিপন/এমএসআর