বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আগুনের গুজব ছড়িয়ে মোবাইল চুরির ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুর সোয়া ২টার দিকে হাসপাতালের শিশু বিভাগে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কেউ আহত না হলেও ছোটাছুটি করে রোগীরা বাইরে বেড়িয়ে আসায় পুরো হাসপাতালে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। রোগীদের ছোটাছুটি এবং আগুনের খবর শুনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ফায়ার সার্ভিসকে কল করলে তারা এসে আগুনের কোনো অস্তিত্ব পায়নি।

শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মনিরুজ্জামান শাহীন জানান, একটি সংঘবদ্ধ চোর চক্র মোবাইল চুরির জন্য হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে গুজব ছড়িয়েছে। এতে আতঙ্কে রোগীরা বাইরে বেড়িয়ে আসেন। ফায়ার সার্ভিসকেও খবর দেওয়া হয়েছিল। তারা এসে আগুনের অস্তিত্ব না পাওয়ায় রোগীদের আশ্বস্ত করে ওয়ার্ডে পাঠাতে মাইকিং করা হয়।

তিনি বলেন, ওয়ার্ড থেকে কারও মোবাইল চুরি হয়েছে এমন অভিযোগ এখনো আমি পাইনি। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে চোর চক্র এই গুজব ছড়িয়েছে। আমরা চোর চক্রকে শনাক্তের চেষ্টা করছি।

শিশু ওয়ার্ডের এমএলএসএস হাসিনা বলেন, দুপুরে ডাক্তার ওয়ার্ড ভিজিট করছিলেন। হঠাৎ আগুন লেগেছে বলে সবাই দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন। আমরা সবাইকে শান্ত করছিলাম। কিন্তু কারও কথা কেউ শুনছিল না। সবাই দৌড়ে হাসপাতালের নিচে গিয়ে অবস্থান নেন।

আরেক এমএলএসএস জব্বর বলেন, একটি মেয়ের মৃগী রোগ আছে, তার ওখানে ভিজিট করছিলেন ডাক্তার। পাশে একজন মোবাইল চার্জ দিচ্ছিল। তখন মেয়েটি উল্টে পড়ে যায়। তখনই চোরেরা ওয়ার্ডে ঢুকে আগুন আগুন বলে গুজব ছড়িয়ে দেয়। আগুনের খবর শুনে রোগীর স্বজনরা, রোগী ওয়ার্ড থেকে হুড়োহুড়ি করে বাইরে বেড়িয়ে যেতে থাকেন। আসলে আগুনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। এখন পর্যন্ত জানতে পেরেছি দুইজনের মোবাইল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। 

হাসপাতালের ল্যাব সহকারী আবুল কালাম বলেন, ওই ওয়ার্ডেই আমি ছিলাম। হঠাৎ শুনি কয়েকজন আগুন আগুন বলে চিৎকার করছে। এরপর সবাই ছোটাছুটি করে বেড়িয়ে যায়। আসলে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আগুনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। একটি চোর চক্র মোবাইল চুরি করার জন্য গুজব ছড়িয়েছে। আমি এখন পর্যন্ত জানতে পেরেছি কমপক্ষে ১০ জনের মোবাইল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। হাসপাতাল প্রশাসন থেকে চোর শনাক্তের কাজ চলছে। প্রশাসনকে পুরো বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বরিশাল সদর স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্বাস উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা সেখানে গিয়ে আগুনের কোনো অস্তিত্ব পাননি। তারপর জানা গেল কেউ গুজব ছড়িয়েছে।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরএআর