সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার ঘরগ্রাম পূর্বপাড়া বাসীর সেই সড়কটি বাঁশের প্যালাসাইটিং দিয়ে বালুর বস্তা বসিয়ে আপাতত চলাচলের উপযোগী করে দেওয়া হয়েছে। এতে স্থায়ী সমাধান না হলেও হাঁটার উপযোগী হয়েছে কিছুটা।

তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, বর্ষার পর রাস্তাটি স্থায়ীভাবে আবার করে দেওয়া হবে। আর এলাকাবাসীর দাবি, বর্ষার পরপরই কোনোরকম দুর্নীতি ছাড়া যেন সড়কটি পরিপূর্ণভাবে সংস্কার করে দেওয়া হয়।

এর‌ আগে ৮ সেপ্টেম্বর অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্টে '১৫ দিনেই ধসে গেল ৮০ লাখ টাকার রাস্তা' শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তারপর কর্তৃপক্ষ এ উদ্যোগ নেয়।

এটুকুতেই যেন ক্ষণিকের স্বস্তি খুঁজছে গ্রামের সাধারণ মানুষ। দিনশেষে ক্লান্ত শরীরে ব্যাটারিচালিত অটোভ্যান রেখে আর মাথায় করে অটোভ্যানের ব্যাটারি নিয়ে বাড়ি ফিরতে হবে না নিম্ন আয়ের অন্তত শতাধিক অটোভ্যান চালকের।
 
রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকালে গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ধসে যাওয়া প্রায় ৫০ মিটারের মতো রাস্তার পাশে পুকুরের পানিতে বাঁশ দিয়ে প্যালাসাইটিং করে সেখান দিয়ে বালুভর্তি ব্যাগ ফেলা হয়েছে। যেখান দিয়ে আপাতত চলাচল করতে পারছে অটোভ্যান, সাইকেল ও মোটরসাইকেল।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, বর্ষার কারণে রাস্তাটি ধসে যাওয়ায় গ্রামবাসীর চলাচলে একটা বড় সমস্যা তৈরি হয়েছিল। সেই সমস্যা আপাতত কাটিয়ে তুলতেই বাঁশ ও বালুর বস্তা দিয়ে চলাচলের উপযোগী করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বন্যার পানি নেমে গেলে রাস্তাটি স্থায়ীভাবে মেরামত করে দেওয়া হবে। 


 
এ সড়কের দায়িত্বে থাকা উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, বাঁশ ও বালু দিয়ে সড়কটি সংস্কার করে আপাতত চলার উপযোগী করে দেওয়া হয়েছে। বর্ষা চলে গেলেই সেখানে মাটি ফেলে আবার রাস্তা করে দেওয়া হবে।
 
তাড়াশ উপজলো প্রকৌশলী মো. আবু সাঈদ বলেন, আপাতত চলাচলের জন্য অস্থায়ীভাবে বাঁশ ও বালুর ব্যাগ দিয়ে রাস্তাটিতে মানুষজনের চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে। তবে সেখানে পর্যাপ্ত মাটি ফেলে পুনরায় রাস্তার কাজ করতে হবে। সে ক্ষেত্রে বন্যার পানি চলে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। এ ছাড়া সেখানে ব্লক দেওয়া যায় কি না, সেটাও আমরা চিন্তা করছি।
 
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সিরাজগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, যেহেতু সেখানে পানি ও এই মুহূর্তে মাটি পাওয়া যাচ্ছে না, তাই আপাতত চলাচলের জন্য এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ওখানে একটি পুকুর ও পানি থাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এই মুহুর্তে কাজ করতে পারছেন না। তবে রাস্তাটি সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে ঠিকাদারকে নির্দেশনা দেওয়া আছে।

উল্লেখ্য, ৮৫ লক্ষাধিক টাকা ব্যয় ধরে ১ হাজার ১৫০ মিটার রাস্তাটির কাজ পায় তন্ময় এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু ৫০ মিটার বাদ দিয়ে ১ হাজার ১০০ মিটার রাস্তার কাজ করে তন্ময় এন্টারপ্রাইজ। তখন এলজিইডি বাকি ৫০ মিটার রাস্তা বাদ দিয়ে বিল দেয়। এতে অল্প রাস্তা থেকেই গ্রামবাসীর হারাতে হয় আরও ৫০ মিটার রাস্তা।

গত বছরের ১৫ মে কাজ শুরু হয়ে চলতি বছরের ৩০ জুলাই শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গত বছরের শেষের দিকে কাজ শুরু করে তড়িঘড়ি ও নিম্নমানের কাজ করে চলতি বছরের ৩০ জুলাই তা শেষ করে। এমনকি সড়ক হস্তান্তরের দিনই উত্তোলন করে নেওয়া হয় শতভাগ বিলও।

শুভ কুমার ঘোষ/এনএ