ভরা মৌসুমে ভোলার মেঘনা-তেতুলিয়া নদী ইলিশ শূন্য ছিল। তবে মৌসুমের শেষে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে কাঙ্ক্ষিত রুপালি ইলিশ। ফলে ঘাট এলাকায় ফিরে এসেছে উৎসবের আমেজ। পাইকার, আড়তদার ও জেলেদের হাঁকডাকে এখন মুখরিত ভোলার মাছঘাটগুলো। 

সরেজমিনে ভোলার মেঘনা নদী তীরবর্তী ইলিশা, তুলাতুলি, নাছির মাঝি ও খাল ঘাট ঘুরে দেখা যায়, নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ ধরা পড়ায় পাল্টে গেছে জেলে পল্লীর চিত্র। দিন-রাত এক করে নদীতে ছুটছেন জেলেরা। জালে পর্যাপ্ত ইলিশ ধরা পড়ায় হাসি ফুটেছে জেলে পরিবারে।

ইলিশা জেলে পল্লীতে কথা হয় হানিফ মাঝির সঙ্গে। তিনি বলেন, ইলিশ মৌসুমের শুরুতে নদীতে মাছ পাইনি। ৮-১০ জন মিলে নদীতে গিয়ে খাওয়ার মাছটুকুও পেতাম না। তখন খুব খারাপ অবস্থা ছিল। এখন নদীতে মোটামুটি মাছ পাওয়া যাচ্ছে। দামও ভালো। এভাবে মাছ পাওয়া গেলে আগের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারব।

তুলাতুলি ঘাটে কথা হয় জেলে বশির মাঝির সঙ্গে। তিনি বলেন, মৌসুমের শুরুতে ইলিশের দেখা না পেলেও ৪-৫ দিন ধরে বেশ ইলিশ ধরা পড়ছে। প্রতিদিন ৮-১০ হাজার টাকার মাছ বিক্রি করতে পারছি।

তুলাতুলি মাছ ঘাটের আড়তদার কামাল মিয়া বলেন, প্রথম দিকে নদীতে মাছ ছিল না। জেলে ও আমাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ছিল। খুবই দুঃসহ সময় কেটেছে। নদীতে মাছ পাওয়ায় ধার-দেনা পরিশোধ করতে পেরে জেলেরা খুশি। আমরাও সময়মতো মোকামে মাছ দিতে পারছি, ব্যবসা ভালো হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, সরকার মা ইলিশ রক্ষায় যে সময় অভিযান দেয় তা থেকে আরও ১০ দিন পিছিয়ে দিলে প্রান্তিক জেলে ও আড়তদাররা পেছনের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবে।

ভোলা সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জামাল হোসাইন বলেন, মৌসুমের শুরুর দিকে তাপমাত্রা বৃদ্ধি, নদীতে লবণাক্ত পানির প্রভাব এবং পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় ইলিশের দেখা মেলেনি। তবে এখন আবহাওয়া ভালো থাকায় জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশ উঠে আসছে।

উল্লেখ্য, ভোলায় প্রায় দুই লাখ জেলে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। এর মধ্যে নিবন্ধিত জেলে ১ লাখ ৩৯ হাজার। মৎস্য বিভাগের মতে, দেশে ইলিশের চাহিদার প্রায় ২৫ ভাগ ভোলা থেকেই পূরণ হয়। ইলিশের এই আয় দিয়ে অনেকটা সচল থাকে ভোলার ২২ লাখ মানুষের অর্থনীতির চাকা।

এসপি/জেএস