কুষ্টিয়ায় স্ত্রীকে পিটিয়ে আহত করা সেই পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। আবু সাঈদ নামে ওই পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে স্ত্রীকে পিটিয়ে মারাত্মক আহত করার অভিযোগ রয়েছে। মারধরের শিকার গৃহবধূ কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

‘কুষ্টিয়ায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে পেটালেন পুলিশ সদস্য’ এমন শিরোনামে অনলাইন নিউজপোর্টাল ঢাকাপোস্টে খবর প্রকাশের পর পুলিশ কনস্টেবল আবু সাঈদকে প্রত্যাহার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার খাইরুল আলম।

এ ঘটনায় (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই গৃহবধূর বাবা। পুলিশ সদস্য আবু সাঈদ কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনে কর্মরত ছিলেন। দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।

জানা যায়, ২ বছর আগে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদার হাতিভাঙ্গা গ্রামের আবু সাঈদের সঙ্গে একই উপজেলার জুরাইনপুর গ্রামের ওই মেয়ের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে নানা বিষয়েই নির্যাতনের শিকার হতেন তিনি।

দাবি পূরণ করেও বিয়ের পরে আরও যৌতুকের জন্য মারধরের শিকার হতে থাকেন ওই গৃহবধূ। যৌতুক দিতে রাজি না হওয়ায় তখন তাকে মারধর করেন আবু সাঈদ। পরে ভাড়া বাসা থেকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে তিনি কয়েকদিন ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আরএমও আশরাফুল আলম জানান, আহত ওই গৃহবধূকে হাসপাতালে আনা হয়। এ সময় তার রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। তার তলপেটসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল। বর্তমানে তিনি বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতালে থেকে রিলিজ দেওয়া হয়েছে তাকে।

এদিকে ওই গৃহবধূর স্বামী ও অভিযুক্ত আবু সাঈদ বলেন, তার স্ত্রীর সঙ্গে একটি ছেলের সম্পর্ক আছে। ফেসবুকে তারা মেসেঞ্জারে কথা বলে। এসব দেখে মাথা ঠিক রাখতে পারিনি। তাই মারধর করা হয়েছে।

ওই গৃহবধূর মামা বলেন, যৌতুক না দেওয়ায় রড দিয়ে আবু সাঈদ তাকে পিটিয়ে আহত করে। তারপর ঘরে আটকে রাখে তাকে। পরে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের সহযোগিতায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।

কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বিরুল আলম জানান, এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এসপি স্যারের নির্দেশে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

পুলিশ সুপার খাইরুল আলম বলেন, আমি ঢাকায় আছি। তবে বিষয়টি শুনেছি। ইতোমধ্যে আবু সাঈদকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। কুষ্টিয়ায় ফিরে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাজু আহমেদ/এমএসআর