সুনামগঞ্জের শাল্লায় সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলার ঘটনার পর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেফতার হয়ে প্রায় ছয় মাস ধরে কারাবন্দী ঝুমন দাসের মুক্তির দাবিতে সিলেটে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়েছে। বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সিলেটের নাগরিক মোর্চা ‘দুষ্কাল প্রতিরোধে আমরা’ এ কর্মসূচির আয়োজন করে।

এতে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বীর মুক্তিযোদ্ধা তবরাক হোসাইন। তিনি বলেন, ফেসবুকে নিজের মত প্রকাশ করা, কারও সমালোচনা করা কোনোভাবেই অপরাধ নয়। স্বাধীন রাষ্ট্রে সবার মত প্রকাশের অধিকার রয়েছে। কোন অপরাধে ঝুমন দাসকে ছয় মাস ধরে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে? তার অপরাধ কি?

তবরাক হোসাইন বলেন, ঝুমন দাস হেফাজত নেতা মামুনুল হকের সমালোচনা করে ফেসবুকে লিখেছেন। এই মামুনুল হকের সমালোচনা সংসদে দাঁড়িয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রীও করেছেন। নানা অভিযোগে মামুনুল কারাগারেও আছেন। তারপরও মামুনুলের সমালোচনার কারণে ঝুমনকে কেন ছয় মাস ধরে জেলে থাকতে হবে?

অবস্থান কর্মসূচির শুরুতে শাল্লার নোয়াগাঁওয়ে হামলা, ঝুমনের গ্রেফতার ও জামিন না পাওয়ার পুরো প্রেক্ষাপট তুলে ধরে স্বাগত বক্তব্য দেন দুষ্কাল প্রতিরোধে আমরা’র সংগঠক আব্দুল করিম কিম।

তিনি বলেন, ঝুমন দাস একজন গ্রাম্য যুবক। সে মামুনুল হককে নিয়ে যে স্ট্যাটাস দিয়েছিল। সেটিকে পুঁজি করে একটি গোাষ্ঠী হাজার হাজার মানুষকে উসকে দিয়ে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা চালায়। আমরা সরেজমিনে গিয়ে দেখেছি। সেদিন কী পরিমাণ নির্যাতনের শিকার হয়েছিল মানুষগুলো। অথচ নিজেদের প্রাণ রক্ষায় হামলার আগের রাতেই ঝুমন দাসকে আইনের হাতে তুলে দিয়েছিলো সংখ্যালঘু গ্রামটির বাসিন্দারা। তারপরও তারা রক্ষা পাননি।

অবস্থান কর্মসূচিতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এনামুল মুনির, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ সিলেট মহানগরের সভাপতি অ্যাডভোকেট মৃত্যুঞ্জয় ধর ভোলা, বাসদ (মার্কসবাদী) সিলেটের সমন্বয়ক উজ্জল রায়, হাওর ও পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক কাশমির রেজা, কবি আবিদ ফায়সাল, সারি বাঁচাও আন্দোলন নেতা আব্দুল হাই আল হাদি, শিক্ষক ও সংগঠক প্রণবকান্তি দেব, আইনজীবী দেবব্রত চৌধুরী লিটন, মাহবুব রাসেল, প্রগতিশীল রাজনৈতিক কর্মী নিরঞ্জন সরকার অপু, তানভীর রুহেল, হিতাংশু কর বাবু, রাজীব রাসেল, অরূপ বাউল, তমিস্রা তিথি প্রমুখ।

তুহিন আহমদ/আরএআর