মো. জুলহাস শেখের জন্মসনদ অনুযায়ী জন্ম ১৯৩৩ সালে। সে হিসাবে তার বয়স ৮৮ বছর। তার একমাত্র ছেলে সাইদুল ইসলামের জন্মতারিখ ১৯৭৩ সালের ১৫ জুলাই। কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্রে বাবা ও ছেলের জন্মতারিখ দেখানো হয়েছে ১৫ জুলাই ১৯৭৩।

ফলে এমন বিপাকে পড়ে জুলহাস দীর্ঘদিন ধরে বয়স্ক ভাতার জন্য ঘুরে বেড়ালেও জাতীয় পরিচয়পত্রে বয়স কম থাকায় পাচ্ছেন না বয়স্ক ভাতা। এ বিষয়ে বারবার ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় ও সমাজসেবা কার্যালয়ে ধরনা দিলেও মেলেনি সমাধান।

মো. জুলহাস শেখ মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলার বৌলতলী ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের ধারার হাট গ্রামের বাসিন্দা। দরিদ্র জুলহাস শেখের জীবন কাটছে কোনোরকম। একমাত্র ছেলে মো. সাইদুল ইসলামের সংসারেও চলছে টানাপোড়েন।

জুলহাস শেখ বলেন, কত মানুষের কাছে গেলাম। কত মানুষ আশ্বাস দিল। কিন্তু কেউ আমাকে একটা বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দিল না। আর কত বয়স হলে বয়স্ক ভাতা পাব? নির্বাচন অফিসের ভুলের কারণে আমি আজ ভুক্তভোগী।

জুলহাস শেখের পুত্রবধূ সেলিনা বেগম বলেন, আমার শ্বশুরের জাতীয় পরিচয়পত্র ঠিক করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা নির্বাচন অফিসে দৌড়াদৌড়ি করেও কোনো প্রতিকার পাইনি। ফলে উনি কোনো সুবিধােভোগ করতে পারছেন না।

বৌলতলী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৫ নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. বাদল মৃধা বলেন, জুলহাস শেখের বয়স প্রায় ৮৮ বছর। কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্রে তার বয়স কম হওয়ায় বয়স্ক ভাতা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তিনি। তার জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করে জমা দিলে অবশ্যই বয়স্ক ভাতার আওতায় আনা হবে।

লৌহজং উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম বলেন, শুধু তিনিই নন, একই সমস্যার কারণে উপজেলায় বহু লোক বয়স্ক ভাতা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। বয়স্ক লোককে দেখলেই বোঝা যায়, কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্রে জন্মতারিখ ভুলের কারণে তাদের বাদ পড়তে হয়।

তিনি আরও জানান, এ ব্যাপারে নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে কীভাবে তাদের এই সমস্যা থেকে সমাধান করা যায়, সেই ব্যবস্থা করব।

এ ব্যাপারে লৌহজং উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রিয়াজ আহমেদ ঢাকা পোস্টেকে বলেন, হয়তো টাইপ করার সময় ভুল হয়েছে। আমার বরাবর আবেদন করলে আমি অবশ্যই সংশোধন করে দেব।

ব.ম শামীম/এনএ