গান্ধী মেমোরিয়াল মিউজিয়াম

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীর গান্ধী আশ্রমে মহাত্মা গান্ধীর ১৫২তম জন্মদিন উপলক্ষে গান্ধী মেমোরিয়াল মিউজিয়ামের উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার (২ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে উদ্বোধন করেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী, সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর, সংসদ সদস্য মিজ অরোমা দত্ত, জাতিসংঘের অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিনিধি তৌমু পউতি আইনেন।

আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক খোরশেদ আলম খান, জেলা পুলিশ সুপার শহীদুল ইসলাম, গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের সভাপতি বিচারপতি সৌমেন্দ্র সরকার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফজলুর রহমান প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, ব্রিটিশ শাসনামলের শেষের দিকে ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থানের মতো নোয়াখালীতেও হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। সেই দুঃসময়ে শান্তি মিশন নিয়ে নোয়াখালী ছুটে আসেন মহাত্মা গান্ধী।

১৯৪৬ সালের ৭ নভেম্বর থেকে ১৯৪৭ সালের ২ মার্চ পর্যন্ত নোয়াখালী অবস্থানকালে তিনি গ্রামে গ্রামে ঘুরে দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন, হিন্দু-মুসলিম ভ্রাতৃত্ব স্থাপনসহ সেবামূলক বিভিন্ন কাজে হাত দেন। এভাবে ১৯৪৭ সালের ২৯ জানুয়ারি সোনাইমুড়ির জয়াগ গ্রামে গান্ধীর আগমন ঘটে।

জয়াগের তৎকালীন জমিদার ব্যারিস্টার হেমন্ত কুমার ঘোষ সব সম্পত্তি মানুষের কল্যাণে ব্যবহারের জন্য গান্ধীকে দিয়ে দেন। এরপর জমিদারবাড়িতে গড়ে ওঠে গান্ধী শান্তি ক্যাম্প। বাড়ির পাশে একটি কারিগরি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন গান্ধী। যা পরে গান্ধী মেমোরিয়াল ইনস্টিটিউট ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামে জাতীয়করণ করা হয়।

যেখানে কর্মমুখী শিক্ষার পাশাপাশি গান্ধীর সাতটি ‘অহিংস নীতি-নীতিহীন রাজনীতি, নৈতিকতাহীন বাণিজ্য, পরিশ্রমহীন সম্পদ, চরিত্রহীন শিক্ষা, মানবতাহীন বিজ্ঞান, বিবেকবর্জিত আনন্দ ও ত্যাগহীন অর্চনা জীবনদর্শন’ সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে।

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে ‘গান্ধী আশ্রম ট্রাস্ট’ অর্ডিন্যান্স গঠনের মধ্যদিয়ে মানুষের মধ্যে গান্ধীর জীবন দর্শন ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ও বিভিন্ন সেবামূলক কাজ শুরু করা হয়।

হাসিব আল আমিন/এমএসআর