প্রধান শিক্ষক খোরশেদ আলম

নরসিংদীর পলাশে শহীদ মিনারের পিলার ভেঙে আড়াই বছরের শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় সেকান্দরদী এ এম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খোরশেদ আলমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। রোববার (০৩ অক্টোবর) সকালে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়া বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে নিহত শিশুর পরিবারের হাতে এক লাখ টাকা তুলে দেওয়া হয়।

এর আগে শনিবার (০২ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের সেকান্দরদী এ এম উচ্চ বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের বেদিতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত জান্নাতি আক্তার সেকান্দরদী গ্রামের রাব্বি মোল্লার মেয়ে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সেকান্দরদী এ এম উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠের পাশে বিকেলে মায়ের সঙ্গে ঘুরতে যান জান্নাতি। তিনি মায়ের সঙ্গে শহীদ মিনারের পাশে বসলে হঠাৎ শহীদ মিনারের একটি পিলার ভেঙে পড়ে। এ সময় এর নিচে চাপা পড়ে গুরুতর আহত হন জান্নাতি। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

গজারিয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. সুরুজ মিয়া বলেন, শহীদ মিনারটি দীর্ঘদিন ধরেই জীর্ণশীর্ণ অবস্থায় ছিল। গত দেড় বছর ধরে স্কুল বন্ধ থাকায় এটার পরিচর্যাও নেওয়া হয়নি।

গজারিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন চৌধুরী জানান, দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়টির শহীদ মিনার খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল। অবস্থা এমন ছিল যে, এর একটি পিলার দড়ি দিয়ে পার্শ্ববর্তী একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। দীর্ঘদিন ধরে এই অবস্থায় থাকলেও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেটি মেরামত করেননি।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও পলাশ উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ জাবেদ হোসেন জানান, শিশু নিহতের ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার কারণে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক খোরশেদ আলমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বদরুজ্জামান ভূঁইয়াকে আহ্বায়ক করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

পলাশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানা আফসানা চৌধুরী বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গতকাল রাতেই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহত শিশুটির পরিবারের হাতে ২৫ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়াও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে আজ সকালে আরও এক লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।

রাকিবুল ইসলাম/আরএআর