পাবনার সব হাটবাজারে হঠাৎ বেড়ে গেছে পেঁয়াজের দাম। মাত্র চার দিনে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ২০ থেকে ২৫ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে। ৭ দিনের মধ্যে পেঁয়াজের কেজি ১০০ টাকা হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ।

বুধবার (৬ অক্টোবর) সকালে পাবনা শহরের বড় বাজার, হাজিরহাট, আতাইকুলা, সুজানগর, সাঁথিয়া, বেড়ার করমজা হাটসহ বেশ কয়েকটি খুচরা ও প্রাইকারি হাটে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত শনিবার খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল সর্বোচ্চ ৪০ টাকায়। বুধবার সেই দাম বেড়ে হয়েছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। আর পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়।

বাজারের বড় আড়তদার ব্যবসায়ীরা বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানিতে কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি হলে বাজারেও অস্থিরতা তৈরি হয়। গত শনিবার থেকে বাজারে পেঁয়াজ কম আসছে। পাশাপাশি পাবনার পাইকারি মোকামে স্থানীয় পেঁয়াজের সরববাহ কমে গেছে। এসব কারণে প্রায় এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা।

তারা আরও জানান, ভারতের মধ্যপ্রদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হলেও আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় বর্তমানে ব্যাঙ্গালুরু থেকে আমদানি করছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যাঙ্গালুরু থেকে ট্রাকে করে পেঁয়াজ হিলি বন্দরে আসতে সময় লাগে সাত দিন। দীর্ঘ পথ পেঁয়াজভর্তি ট্রাক কাগজ দিয়ে ঢাকা থাকায় পেঁয়াজে পচন ধরে। ফলে লোকসান গুনতে হয়। এ ছাড়া ভারতের পশ্চিমবঙ্গে শুরু হয়েছে দুর্গাপূজার আমেজ। ফলে পেঁয়াজ সরবরাহ কমিয়ে দেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। এ জন্য দেশের বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বেড়ে গেছে।

শহরের বড় বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী আব্দুল মুকুল হোসেন বলেন, বাজারে পেঁয়াজবোঝাই ট্রাক কম আসছে। সে জন্য সব জাতের পেঁয়াজের দাম হঠাৎ বেড়ে গেছে।’ গত শনিবারে ১৭০০ টাকা মণ কিনলেও আজ কিনতে হয়েছে ২৩০০ থেকে ২৪০০ টাকা পর্যন্ত। আমাদের বিক্রি করতে হবে এর চেয়েও বেশি দামে।

ফরহাদ হোসেন নামে এক পেঁয়াজের আড়তদার বলেন, 'পেঁয়াজের দামের কোনো ঠিকঠিকানা নেই। গতকাল মঙ্গলবার সকালে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৬০ টাকা বিক্রি হলেও বিকেলে দাম হয় ৬৫ টাকা করে। আবার কোনো কোনো দোকানে ৭০ টাকাও দাম চাওয়া হচ্ছে।

পেঁয়াজের পাইকরি মোকাম পাবনার হাজিরহাটের ব্যবসায়ী কামাল হোসেন, ঝন্টু প্রামাণিক জানান, এলসি করা পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। গত সোমবার এক মণ দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করেন ১ হাজার ৮০০ টাকা। গতকাল মঙ্গলবার তা বিক্রি হয় ২ হাজার ৩০০ টাকায়। আজ আরও ১০০ টাকা দাম বাড়তি হয়েছে।

ঈশ্বরদীর সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী ইসলাম বলেন, অধিক মুনাফার জন্য ঈশ্বরদীর বাজারে যাতে কেউ কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে না পারে, সে জন্য প্রশাসনের তৎপরতা চালমান রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, বিদেশ থেকে পেঁয়াজের আমদানি কমে যাওয়ায় হয়তো দাম বেড়েছে। তবে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে শুনেছি ভারতে নাকি পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। ওখান থেকে আমদানি করতে হচ্ছে বেশি দামে।

পাবনার জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাজার মনিটরিং সেল গঠন করতে এখনো আমরা সরকারি নির্দেশনা পায়নি। নির্দেশনা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাকিব হাসনাত/এনএ