হামলার শিকার রফিকুল ইসলাম

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে আইন অমান্য করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) একটি বাড়িতে হামলা চালিয়েছে।  বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলা সদর ইউনিয়নের উত্তর কুটিচন্দ্রখানা নাখারজান গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বিএসএফ সদস্যদের টানাহেঁচড়ায় বাড়ির মালিকসহ আরও তিনজন লাঞ্ছিত হয়েছেন। 

এ ঘটনায় বিজিবি সদস্যরা বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠক করেছেন। তবে রাতের অন্ধকারে চোরাকারবারিদের ধাওয়া করতে গিয়ে ভুলবশত বাংলাদেশে প্রবেশ করেছিলেন বলে বিজিবিকে জানিয়েছেন বিএসএফ সদস্যরা। 

স্থানীয় বাসিন্দা জাহিদুল হক জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সীমান্তের আন্তর্জাতিক ৯৪১ মেইন পিলারের কাছে দুই দেশের মাদক চোরাকারবারিরা মালামাল পার করার সময় ১৯২ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের অধীনস্ত সেউটি-২ ছাবরী ক্যাম্পের টহলরত বিএসএফের সদস্যরা তাদেরকে ধাওয়া করেন। মাদক চোরাকারবারিরা তাদের ধাওয়া খেয়ে বাংলাদেশের নাখারজান গ্রামে ঢুকে পড়ে। এ সময় বিএসএফের সদস্যরা তাদের পিছু নেন। পরে ওই গ্রামের নিরীহ রফিকুল ইসলামের বাড়িতে চোরাকারবারিরা ঢুকেছে বলে সন্দেহ করে গেট খোলার জন্য চাপ দেন বিএসএফ সদস্যরা। একপর্যায়ে রফিকুল ইসলামের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রফিকুল ইসলামের গেট ও টিনের ভেড়া ভেঙে বাড়িতে প্রবেশ করেন বিএসএফ সদস্যরা। 

তারা রফিকুল ইসলামের পরিবারের লোকজনকে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করেন। এ সময়  রফিকুল ইসলামের স্ত্রী মজিরন, তার ছেলে  জিয়াউর রহমান ও জিয়াউর রহমানের স্ত্রী ইতিকেও টানাহেঁচড়া করে লাঞ্ছিত করেন তারা। পরে এলাকার লোকজন এগিয়ে এলে বিএসএফের সদস্যরা  দ্রুত ভারতের ভূ-খণ্ডেপ্রবেশ করে। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে বিজিবিকে জানায় এলাকাবাসী। বিজিবি সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিএসএফের এমন কর্মকাণ্ডের কড়া প্রতিবাদ জানান। 

হামলার শিকার রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি বিএসএফকে বলেছি মাদক চোরাকারবারিরা আমার বাড়িতে প্রবেশ করেনি। তার পরেও চাপ প্রয়োগ করে আমার ঘরের বেড়ার টিন ও গেট ভাঙচুর করেছে। পরিবারের সদস্যদের লাঞ্ছিত করে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করেছে। পরে এলাকার লোকজন জড়ো হলে তারা দ্রুত ভারতে প্রবেশ করে। 

এ বিষয়ে লালমনিহাট ১৫ বিজিবির কমান্ডার লে. কর্নেল এসএম তৌহিদুল আলম বলেন, ভুলবশত বিএসএফ সদস্যরা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছিল। আমরা প্রতিবাদ জানানোর কারণে শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে ওই সীমান্তে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। তারা ভুল স্বীকার করেছে। আর এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না বলেও তারা জানিয়েছে। এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। 

জুয়েল রানা/আরএআর