পাবনার সব হাট-বাজারে হঠাৎ বেড়ে গিয়েছিল পেঁয়াজের দাম। মাত্র চার দিনে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ২৫ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছিল। তবে দুই দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০ টাকা কমেছে। দাম কমে যাওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে। 

শুক্রবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে পাবনা শহরের বড় বাজার, হাজিরহাট, দুবলিয়া, মাসুম বাজারসহ বেশ কয়েকটি খুচরা ও পাইকারি হাটে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত শনিবার (২ অক্টোবর) খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল সর্বোচ্চ ৪০ টাকায়। বুধবার (৬ অক্টোবর) সেই দাম বেড়ে হয়েছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা। আর পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। শুক্রবার (৮ অক্টোবর) এসব হাটে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে পাইকারি পর্যায়ে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। আর খুচরা পর্যায়ে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। দুইদিনের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা কমেছে পেঁয়াজের দাম।

বাজারের আড়তদাররা বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানিতে কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি হলে বাজারেও অস্থিরতা তৈরি হয়। গত শনিবার থেকে বাজারে পেঁয়াজ কম আসছিল। পাশাপাশি পাবনার পাইকারি মোকামে স্থানীয় পেঁয়াজের সরববাহ কমে গিয়েছিল। যার কারণে হঠাৎ দাম বেড়ে যায়। দাম বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয় কৃষক ও পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা বাড়িতে থাকা পেঁয়াজ নসিমন-ট্রাক ভর্তি করে হাটে নিয়ে আসায় পেঁয়াজের দাম এখন কিছুটা কমেছে। 

ব্যবসায়ীরা জানান, জেলায় পর্যাপ্ত পেঁয়াজ মজুদ রয়েছে। যার কারণে পেঁয়াজের ঘাটতি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। পেঁয়াজের দাম আর নাও বাড়তে পারে। কৃষকের চাতালে শত শত মেট্রিক টন পেঁয়াজ মজুদ রয়েছে। 

শহরের মাসুম বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী লাল মিয়া বলেন, বাজারে পেঁয়াজবোঝাই ট্রাক কমে যাওয়ায় দুই থেকে তিনদিন পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছিল। এখন একটু স্বস্তি ফিরেছে।
গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার ২৪০০ থেকে ২৫০০ টাকা মণ পেঁয়াজ কিনলেও আজ কিনেছি ২০০০ টাকা থেকে ২ হাজার ১০০  টাকায়। তারপরও মান অনুযায়ী পেঁয়াজের দাম বিভিন্ন হাটে বিভিন্ন রকম।  

হাজিরহাটের মজু প্রামানিক নামে এক পেঁয়াজের আড়তদার বলেন, পেঁয়াজের দামের কোনো ঠিক ঠিকানা নেই। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭০ টাকা বিক্রি হয়েছে। আজ ৬০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

হাজিরহাটের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী কামাল হোসেন ও রফিকুল আলম জানান, এলসি করা পেঁয়াজের দাম দুই দিন আগে বাড়লেও আজ একটু কমে গেছে। গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার হাটে ২ হাজার ৫০০ টাকা মণ পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। আজ বিক্রি হয়েছে ২ হাজার টাকা থেকে ২ হাজার ১০০ টাকা। 

হাজিরহাটে পেঁয়াজ বিক্রি করতে আসা কৃষক শওকত আলী বলেন, পেঁয়াজের দাম বেশি দেখে হাটে ১০ মণ পেঁয়াজ এনেছিলাম। বাজারে এসে দেখি কিছুটা দাম কম। সব মিলিয়ে মৌসুমের শুরুর চেয়ে ভালো দাম পাচ্ছি। এমন বাজার সব সময় থাকলে আমরা লাভবান হবো। 

পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আব্দুল কাদের ঢাকা পোস্টকে বলেন, চাষিরা বছরের শেষ দিকে এসে পেঁয়াজের ভালো দাম পাচ্ছেন। কৃষকরা অন্তত খরচ তুলতে পারছেন। কেজি প্রতি পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকা ছাড়িয়ে গেলে তখন পেঁয়াজ আমদানি করা হবে। গত দুই দিনের তুলনায় আজ পেঁয়াজের দাম একটু কমেছে বলে শুনেছি। 

পাবনার জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাজার মনিটরিং সেল গঠন করতে এখনো আমরা সরকারি নির্দেশনা পাইনি। নির্দেশনা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাকিব হাসনাত/আরএআর