দুধ নয়, দুধ সাদৃশ্য তরল পদার্থ দিচ্ছে সেই বাছুরটি
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে ১৫ দিন বয়সী একটি বাছুর দিনে আধা লিটার দুধ দিচ্ছে বলে খবর ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে একাধিক গণমাধ্যমে খবরও প্রকাশিত হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, এটা দুধ নয়, বাছুরের দুগ্ধগ্রন্থি থেকে হরমনজনিত কারণে নিঃসৃত পদার্থ। এই দুধ সাদৃশ্য পদার্থ পানে মানবদেহের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
গত কয়েকদিন ধরে দেশের প্রথম সারির কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, গত ১ সেপ্টেম্বর গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের খামারি আফছার আলীর একটি ফ্রিজিয়ান জাতের গাভি ওই বাছুরটি জন্ম দেয়। ২৫ সেপ্টেম্বর ওই খামারি বাছুরের দুগ্ধস্থান ফোলা দেখতে পান। পরে তা টেনে বুঝতে পারেন দুধ বের হচ্ছে। এরপর থেকেই তিনি দুধ সংগ্রহ শুরু করেন।
বিজ্ঞাপন
বাছুরটি দৈনিক ৫০০ থেকে ৭৫০ গ্রাম পর্যন্ত দুধ দিয়ে থাকে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হলেও এর সত্যতা পাওয়া যায়নি। দিনে চার থেকে পাঁচ বার বাছুরটি থেকে সর্বোচ্চ এক পোয়া দুধ সাদৃশ পদার্থ সংগ্রহ করেছেন খামারি আফছার আলী। তবে বর্তমানে সেটিও বন্ধ রেখেছেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
খামারি আফছার আলী জানান, হঠাৎ বাছুরের দুগ্ধস্থান ফোলা দেখে তিনি স্থানীয় পশু চিকিৎসক রশিদ মিয়াকে বিষয়টি জানান। পরে ওই চিকিৎসক বিষয়টি অলৌকিক ভেবে দুধ সংগ্রহের পরামর্শ দেন। তখন থেকে আফছার সেই দুধ সাদৃশ্য পদার্থ সংগ্রহ শুরু করেন। কিন্তু পান না করে তিনি তা ডাস্টবিনে ফেলে দেন।
তিনি আরও জানান, স্থানীয় রশিদ ডাক্তার তাকে ভুল পরামর্শ দিয়েছেন। যা শুনে তিনি দুধ সংগ্রহ শুরু করেন। কিন্তু সেই দুধ তিনি পান করতে না পেরে ফেলে দেন।
আফছার আলী বলেন, ‘দুধ দোয়াই ভুল করছি। বাছুর তো অসুস্থ হয়া গেছে। ডাক্তারও কাল ওলানোত হাত দিবের মানা করছে। এখন বাছুর ভাল আছে।’
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন রেবা বেগম বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, হরমোনজনিত কারণে বাছুর থেকে নিঃসৃত পদার্থ বের হচ্ছে। এটাকে আমরা স্বাভাবিক দুধ বলতে পারি না। এ ছাড়া এই পদার্থ পান না করাই উত্তম।’
এ বিষয়ে গাইবান্ধা জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন ডাক্তার আনোয়ার হাসান বলেন, হরমোনজনিত কারণে এটা হতে পারে। দুধ নয় এটাকে আমরা নিঃসৃত পদার্থ বলতে পারি। নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এর সঠিক কারণ জানা যাবে।
রিপন আকন্দ/আরআই