সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ৬ নং দক্ষিণ রনিখাই ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতা ইকবাল হোসেন ইমাদ। তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার পরপরই আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় তুলছেন। যে কারণে সচেতন মহলে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

রোববার (১০ অক্টোবর) সিলেটসহ সারাদেশের ৮৪৮ ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয় কেন্দ্র থেকে। এর মধ্যে সিলেট বিভাগে সাত উপজেলার ৪৪ ইউপিতে নৌকার প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়। আর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ওই ইউপিতে চূড়ান্ত হন ইমাদ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইকবাল হোসেন ইমাদ ২০০৬-০৭ কমিটির কোম্পানীগঞ্জ ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ছিলেন। তার সময় সভাপতি ছিলেন আব্দুস শাকুর। ২০১৬ সাল পর্যন্ত ইমাদ জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। আওয়ামী লীগে যোগদানের পর ২০১৯ সালে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটিতে সদস্যপদ লাভ করেন।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিন্দা ও সমালোচনার ঝড় বইলেও ইউনিয়ন নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী হতে তৃণমূলের ২০টি ভোটের মধ্যে ইমাদ ১১টি পেয়ে প্রাথমিকভাবে নৌকার প্রার্থী হিসেবে ছিলেন। পরে তিনি কেন্দ্র থেকেও নৌকার মনোনয়ন পান।

এ বিষয়ে নৌকার প্রার্থী ইকবাল হোসেন ইমাদ বলেন, যে ইকবাল হোসেন ইমাদ ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি অন্য একজন। তার বাড়ি বর্ণী এলাকায়। তিনি মাওলানা আব্দুন নূর সাহেবের ছেলে। বর্তমানে তিনি আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকে চাকরি করছেন। আর আমার বাবার নাম আব্দুস সালাম। আমার এলাকার নাম খাগাইল। আমি ২০০৫ থেকে লন্ডনে ছিলাম। দেশে এসেছি ২০১৬ সালে। সেখানেও যার আওতায় আমি চাকরি করতাম, তিনি ম্যানচেস্টার আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছিলেন। সুতরাং আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চলছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী আমজদ আলী বলেন, এখন তিনি কেন্দ্র থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন। কেউ কথা বললে জিহ্বা কাটা যাবে। এখন অনেকেই বিএনপি-জামায়াত থেকে ঢুকে যাচ্ছে। কথা যখন বলবেন, তাহলে আগে বলতে পারতেন।

তবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফতাব আলী কালা মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তিনি জামায়াত করতেন তো কী হয়েছে? এখন তিনি আওয়ামী লীগেরও বাপ। অনেক বড় আওয়ামী লীগ। আপনার-আমার কথায় তো তো তার মনোনয়ন চলে যাবে না। তাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনোনয়ন দিয়েছেন। সুতরাং তিনি অনেক বড় আওয়ামী লীগার।

এতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের ভূমিকা কী, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের আর কী ভূমিকা থাকতে পারে? আমরা তো মনোনয়ন দিই না।

সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির খান বলেন, আমাদের তো এত নিচে গিয়ে কাউকে চেনা সম্ভব না। তৃণমূলের ভোটেই তিনি এগিয়েছিলেন। আগে একটা মানুষও কথা বলেনি। সুতরাং এসব ব্যাপারে উপজেলার নেতারাই ভালো বলতে পারতেন।

তুহিন আহমদ/এনএ