সিলেট জেলা কমিটির সভাপতি ও সম্পাদক

দীর্ঘ অপেক্ষার পর সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে আগামী এক বছরের জন্য এই কমিটি অনুমোদন দেন ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। সিলেট জেলা কমিটির নতুন সভাপতি হিসেবে নাজমুল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রাহেল সিরাজের নাম প্রকাশ করা হয়েছে।
 
জয় ও লেখক স্বাক্ষরিত ছাত্রলীগের প্যাডে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে জাওয়াদ ইবনে জাহিদ খান, বিপ্লব কান্তি দাস, মুহিবুর রহমান মুহিব, কনক পাল অরুপের নাম ঘোষণা করা হয়।

অপরদিকে, সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের নতুন কমিটির সভাপতি হিসেবে কিশওয়ার জাহান সৌরভ ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নাইম আহমদের নাম ঘোষণা করা হয়। মহানগর কমিটিতে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে হোসাইন মোহাম্মদ সাগর ও সঞ্জয় পাশী জয়ের নাম উল্লেখ করা হয়।

সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের নতুন কমিটির সভাপতি ও সম্পাদক

মঙ্গলবার দুপুরে লেখক ভট্টাচার্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নতুন কমিটির ঘোষিত প্যাডটি প্রকাশ দেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, আগামী সাত দিনের মধ্যে আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হবে।
 
এদিকে, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য মুহিবুর রহমান মুহিব ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে এই পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। তিনি লিখেছেন, আমাকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সদস্য করায় আমি ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমি বিশ্বাস করি, আমি এই পদের যোগ্য নই। তাই আমি স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নিলাম।

গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের কমিটির একটি সংবাদবিজ্ঞপ্তি ভাইরাল হয়ে। তবে সেই বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া ছিল বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।

অভ্যন্তরীণ কোন্দলে ছাত্রলীগকর্মী ওমর মিয়াদ হত্যাকাণ্ডে ২০১৭ সালের ১৮ অক্টোবর বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয় সিলেট জেলা ছাত্রলীগের কমিটি। আর ২০১৮ সালে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর ২১ অক্টোবর বিলুপ্ত করা হয় মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি। এরপর একাধিকবার সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

সিলেটে জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের নতুন কমিটি গঠনের লক্ষে গত ১৩ মার্চ সিলেটে কর্মিসভা করে ছাত্রলীগ। এতে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য্য। এ সভায় দ্রুত সিলেটে ছাত্রলীগের কমিটি দেওয়ার ঘোষণা দেন ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতা।

সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সবশেষ কমিটি গঠন করা হয় ২০১৪ সালে। কমিটিতে শাহরিয়ার আলম সামাদকে সভাপতি ও এম রায়হান চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এই কমিটি গঠনের পর জেলা ছাত্রলীগে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ে। কমিটির পদপ্রাপ্তদের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন পদবঞ্চিত একটি অংশ। একাধিকবার কমিটি স্থগিতও করা হয়।

কেন্দ্রীয় কমিটি সামাদ-রায়হানকে সম্মেলন করার জন্য তারিখ নির্ধারণ করে দিলেও তারা সম্মেলন করতে ব্যর্থ হন। এরপর ২০১৭ সালের অক্টোবরে টিলাগড় কেন্দ্রীক অভ্যন্তরীণ কোন্দলে খুন হন ছাত্রলীগকর্মী ওমর মিয়াদ। এই হত্যায় জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক রায়হান চৌধুরী প্রধান আসামি হন। এই ঘটনায় জেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। পরে সভাপতি সাধারণ সম্পাদক পদে প্রায় দেড়শ জীববৃত্তান্ত সংগ্রহ করা হলেও আর কমিটি গঠন করা হয়নি।

২০১৫ সালের ২০ জুলাই গঠন করা হয় মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি। কমিটিতে আব্দুল বাছিত রুম্মানকে সভাপতি ও আব্দুল আলীম তুষারকে সাধারণ সম্পাদক, সজল দাস অনিক ও সৈকত চন্দ্র রিমিকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়। কমিটির মেয়াদ দেওয়া হয় এক বছর। তবে কমিটি গঠনের তিন বছরেও ছাত্রলীগের কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হয়নি।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি ২০১৮ সালের ২১ অক্টোবর বিলুপ্ত করে মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি। সঙ্গে সংগঠনের নীতি আদর্শ পরিপন্থী নৈতিকস্খলনজনিত অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় বহিষ্কার করা হয় মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলীম তুষারকে। যদিও পরে তা প্রত্যাহার করা হয়।

তুহিন আহমদ/এমএসআর