নওগাঁ সদর উপজেলার জালম মাগুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনটি ঝুুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ফলে আতঙ্ক নিয়ে শ্রেণিকক্ষে আসছেন শিক্ষক ও কোমলমতি শিশুরা। এ অবস্থায় দ্রুত সংস্কারসহ নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা।

জানা গেছে, সদর উপজেলার কীর্তিপুর ইউনিয়নের জালম মাগুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নির্মাণের ৩১ বছরের মাথায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ভবনের পলেস্তার খসে রড বেরিয়ে এসেছে। মাঝে মধ্যে পলেস্তার খসে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের গায়ে পড়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে।

এ ছাড়া ভবনের ছাদ চুয়ে পানি পড়া, বিম ও দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। ভবনটি দুর্বল হওয়ার কারণে বৃষ্টি হলে শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসতে চায় না। ভবনটি কয়েকবার মেরামত করা হলেও ভালো কোনো ফল হয়নি। ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আতঙ্কের মধ্যে ক্লাস করতে হচ্ছে।

বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র আয়েশা সিদ্দিকা ঢাকা পোস্টকে বলে, আমাদের স্কুলটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় মা-বাবা আমাদের স্কুলে পাঠাতে ভয় করে। স্কুলে আসতেও ভয় লাগে। প্রধানমন্ত্রী যেন আমাদের বিদ্যালয়ে নতুন একটি ভবন তৈরি করে দেন।

একই ক্লাসের আরেক শিক্ষার্থী রিয়াদ আহম্মেদ ঢাকা পোস্টকে বলে, ফ্যান চলার সময় মনে হয় যেন পুরো ভবন কাঁপছে। বৃষ্টি হলে ছাদ বেয়ে পানি পড়ে। ছাদের পলেস্তার অনেক সময় খসে গায়ে পড়ে। দেয়াল ফেটে আছে মনে হয় কখন ভেঙে পড়বে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. জুলেখা বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিদ্যালয়টিতে ১৪০ জন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। কয়েকবার ভবনটি সংস্কার করা হয়েছে। তারপরও ছাদ দিয়ে পানি পড়ে। ছাদের বিমগুলো ফেটে গেছে এবং দেয়ালের পলেস্তার খসে পড়ছে। জানালা দরজাগুলো দুর্বল। বাচ্চাদের নিয়ে আতঙ্কের ভেতরে ক্লাস করতে হয়। অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে আসতে দিতে চায় না।

তিনি আরও বলেন, দিন দিন স্কুলে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কমে যাচ্ছে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার লিখিতভাবে জানিয়েও কোনো ফল হয়নি। 

নওগাঁ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিক মোহাম্মদ ইউসুফ রেজা ঢাকা পোস্টকে বলেন, জালম মাগুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনটি পুরাতন। সংস্কারের জন্য প্রধান শিক্ষক উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে সাত লাখ টাকার একটা চাহিদা পাঠিয়েছেন। বরাদ্দ পেলে বিদ্যালয়ের সমস্যাগুলো দূর করা সম্ভব হবে। উপজেলা প্রকৌশলীর মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে ছাদের ওপরে জলছাদ ঢালাই করে বিদ্যালয়কে সুন্দর করা সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, বিদ্যালয়ে নতুন ভবনের প্রয়োজন হলে ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করতে হবে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলতে বলব। যদি সেখান থেকে এ রকম কোনো নির্দেশনা আসে তারপর পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

এসপি