কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিকে আহ্বায়ক করে আড়াই বছর পর বিএনপির লক্ষ্মীপুর জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাসিবুর রহমানকে যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাহাবুদ্দিন সাবুকে সদস্যসচিব করে ৩৩ সদস্যকে অনুমোদন করা হয়।

দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কমিটির অনুমোদন দেন। শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য নেটওয়ার্ক দুর্বলতার কারণে বক্তব্যের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের মুঠোফোনে চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

দলীয় সূত্র জানায়, ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকায় চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে জেলার দায়িত্বশীল নেতাদের ডাকা হয়। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম বিষয়টি সমন্বয় করেছেন। সেখানে জেলার বিভিন্ন শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত ২৭ নেতা আলাদাভাবে গোপন ভোটসহ লিখিত মতামত দেন। সকাল ১১টা থেকে ৩ ঘণ্টাব্যাপী চলে এ কার্যক্রম।

মতামত দিয়েছেন জেলার ৬টি থানা, ৪টি পৌরসভা কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, বিলুপ্ত জেলা কমিটির সহসভাপতি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক।

তবে সেখানে কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, বিলুপ্ত জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল খায়ের ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক সাহাবুদ্দিন সাবু উপস্থিত ছিলেন না। তারা তিনজনই জেলা কমিটির সভাপতি প্রার্থী ছিলেন। সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী- বিলুপ্ত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাসিবুর রহমান, সদর উপজেলা (পূর্ব) কমিটির সভাপতি মাইন উদ্দিন চৌধুরী রিয়াজ ও জেলা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া।

সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে খালেদা জিয়া লক্ষ্মীপুর-২ আসনে নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছিলেন। তখন থেকেই এ জেলাকে অনেকেই খালেদার ঘর বলে অবিহিত করেন। যদিও দুবারই তিনি আসনটি ছেড়ে দিলে সেখানে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে জেলা বিএনপির মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ২০১৯ সালের ৯ মার্চ রাতে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। কেন্দ্রীয় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কমিটিটি বিলুপ্ত করেন। তখন বলা হয়েছিল, ওই বছর ৩০ এপ্রিলের মধ্যে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হবে। কিন্তু আড়াই বছর পর শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) কমিটি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় বিএনপি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সবশেষ ২০০৯ সালে জেলা বিএনপির কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে আবুল খায়ের ভূঁইয়াকে সভাপতি ও সাহাবুদ্দিন সাবুকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। ২০১৭ সাল থেকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং তাদের অনুসারীরা বিভক্ত হয়ে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। তখন আবুল খায়ের ভূঁইয়ার বিভিন্ন কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী অংশ নেন।

শহীদ উদ্দিন ও সাবুর বাড়িতে দলীয় কর্মসূচিগুলো আলাদা আয়োজন করা হয়। এমনকি কারাবন্দি থাকা অবস্থায় খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতেও তারা এক হতে পারেননি। জেলা ডাকঘরের সামনে একটি ভবনের দ্বিতীয় তলায় বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয় ছিল। কয়েক বছরের ভাড়া পরিশোধ না করায় ভবনমালিক সেটি একটি বিরিয়ানি দোকানিকে ভাড়া দিয়েছেন। সেখানে এখন বিএনপির কার্যালয় নেই।

হাসান মাহমুদ শাকিল/এনএ