রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের পরিচালকের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে তাকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করেছেন হাসপাতালে কর্মরত নার্সরা। তাদের অভিযোগ, করোনাকালে চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিতদের জন্য সরকারঘোষিত বিশেষ প্রণোদনার টাকা দিতে টালবাহানা করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

রোববার (১৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন নার্সরা। প্রণোদনা বঞ্চিত নার্সদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কাজে যোগ না দেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছে নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন।  

বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সময় থেকে তারা নিরবচ্ছিন্নভাবে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। সরকার স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য বিশেষ প্রণোদনা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। প্রণোদনার সেই টাকা হাসপাতালের চিকিৎসক-কর্মচারীরা পেয়েছেন। 

কিন্তু নার্সদের কাউকে দেওয়া হয়নি। কেন পাচ্ছেন না? তাও জানায়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সর্বশেষ গত ২২ সেপ্টেম্বর তালিকা দেওয়া হয়। কিন্তু সেই তালিকা এখনও পাঠানো হয়নি। উল্টো পরিচালক খারাপ ব্যবহার করছেন বলে তাদের অভিযোগ।

শাহিনা পারভীন নামে আরেক নার্স বলেন, আমরা এরআগে ৭ জুলাই আন্দোলন করেছি। সেদিনও একই দাবি পরিচালককে জানিয়েছি। তাকে একাধিকবার তালিকাও দিয়েছি। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কাজে যোগ দেব না।

নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান মানিক বলেন, আমাদের তো সরকারঘোষিত প্রণোদনার অর্থ চাচ্ছি। কোনো অন্যায় দাবি নিয়ে আন্দোলন করছি না। এটা আমাদের ন্যায্য পাওনা। অথচ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অজ্ঞাত কারণে আমাদেরকে অবহেলা করছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বিশেষ প্রণোদনার অর্থ না দেওয়া হলে বৃহৎ আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফোরকান আলী বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে প্রণোদনার বিষয়ে পরিচালকের কাছে গেলে তিনি অশোভন আচরণ করেন। রাগে ফুলদানি ও টেলিফোন ছুড়ে ফেলেন। আমরা তো তার কাছে করুণা চাচ্ছি না। তিনি আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করছেন।

তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে হাসপাতালের ২৪২ জন চিকিৎসকের সবাই প্রণোদনা পেয়েছেন। কর্মচারীরাও প্রণোদনার টাকা নিয়েছেন। কিন্তু আমাদের এখন পর্যন্ত একটি টাকাও দেওয়া হয়নি। অথচ আমরা সব থেকে বেশি সেবা দিচ্ছি।

এ বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. রেজাউল করিম গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। হাসপাতালের অন্য কর্মকর্তারাও বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এমএসআর