জনসাধারণের চলাচলের সুবিধার্থে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার হাতিবান্দা ইউনিয়নের ঘাগড়া কবিরাজপাড়া খালের ওপর ৪০ ফুট লম্বা একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। কিন্তু কয়েক মাস না যেতেই পাহাড়ি ঢলে ভেঙে যায় সেতুটি। এতে বেকায়দায় পড়েন ১০ গ্রামের ২০ হাজার মানুষ। এখন তাদের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা বাঁশ-কাঠের সাঁকো।

এদিকে দীর্ঘ ১৪ বছর পার হলেও সেতুটি পুনর্নির্মাণে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি কেউ। এ জন্য বাঁশের সাঁকোতে ঝুঁকি নিয়ে  যাতায়াত করেন কবিরাজপাড়া, পটলপাড়া, মন্ডলপাড়া, সরকারপাড়া, শাকপাড়া, মাছপাড়া, তালতলাসহ ১০ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ সাল ঘাগড়া কবিরাজপাড়া খালের ওপর ৪০ ফুট লম্বা একটি সেতু নির্মাণ করে এলজিইডি। নির্মাণের পর কয়েক মাস যেতে না যেতইে পাহাড়ি ঢলে মাটি সরে গিয়ে সেতুটি ধসে পড়ে। এরপর দীর্ঘ ১৪ বছর পেরিয়ে গেলেও সেতুটি পুনর্নির্মাণ করা হয়নি। পরে স্থানীয়দের উদ্যোগে তৈরি কাঠ ও বাঁশের নড়েবড়ে সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে এলাকাবাসী।

কবিরাজপাড়া গ্রামের হায়দার আলী বলেন, সেতুটি ঠিক করার জন্য আমরা এলাকার মেম্বার চেয়ারম্যান সবার কাছেই গেছি। কিন্তু আমাদের কথা কেউ শোনে না। কয়েকদিন আগে এক বৃদ্ধ সাঁকাে দিয়ে খাল পার হতে গিয়ে পানিতে পড়ে যায়। পরে তাকে আমরা পানি থেকে উদ্ধার করি। 

কৃষক আজাহার আলী জানান, প্রতি বছর পাহাড়ি ঢলে সাঁকো ভেঙে যায়। এ জন্য প্রতি বছরই এলাকাবাসীকে কষ্ট করে সাঁকাে নির্মাণ করতে হয়। এই সাঁকাে দিয়ে ১০ গ্রামের কৃষিপণ্য ও গবাদি পশু পারাপার করা হয়। বাঁশের সাঁকো ভেঙে পড়লে আমাদের খুব কষ্ট করতে হয়।

স্থানীয় ঘাগড়া পুটলপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মো. শাহাদৎ হোসেন বলেন, খালের অন্য পাড় থেকে আমার বিদ্যালয়ে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী চলাচল করে। সেতুটি না থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আমাদের। আমি কর্তৃৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানাই যেন দ্রুত আরেকটি সেতু নির্মাণ করা হয়। 

হাতীবন্ধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) মো. আকবর আলী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সেতুটি ভেঙে পড়ে আছে। আমরা কয়েক দফায় কর্তৃৃপক্ষকে জানিয়েছি। কিন্তু তারা সেতুটি পুনর্নির্মাণে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদফতরের উপজেলা প্রকৌশলী মো. মোজাম্মেল বলেন, আমি ভেঙে পড়া সেতুটি পরিদর্শন করেছি। সেতুটি পুনর্নির্মাণের জন্য তালিকা জমা দেওয়া আছে। আশা করি অনুমোদন পেলেই সেতুর কাজ শুরু হবে।

ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারুক আল মাসুদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি। এলাকাবাসীর দুর্ভোগ নিরসনে ওই খালের ওপর সেতু নির্মাণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

জাহিদুল খান সৌরভ/এসপি