গাজীপুর মহানগরের সালনা এলাকায় বুধবার দুপুরে শ্যামলী গার্মেন্টসের শ্রমিকদের দুই মাসের বেতনের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে শ্রমিকরা। অবরোধকালে ওই মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। পরে সন্ধ্যায় শ্রমিকরা মহাসড়কে যানবাহন ভাঙচুর করতে থাকলে পুলিশ তাদের কয়েক রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। 

কারখানার শ্রমিক মো. সোহেল রানা জানান, চলতি মাসসহ ওই প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের ২ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। বারবার বেতন দেয়ার কথা বললেও কর্তৃপক্ষ বেতন দিতে কালক্ষেপণ করছে। সর্বশেষ চলতি মাসের ২৫ তারিখ বকেয়া বেতন দেয়ার কথা থাকলেও কর্তৃপক্ষ তা দেয়নি। পরে তারা দুপুর আড়াইটা থেকে কারখানার পাশে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন শুরু করে। সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলে। পরে সন্ধ্যা ৬টার দিকে পুলিশ তাদের লাঠিচার্জ ও টিয়ারসেল-রাবার বুলেট ছুঁড়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। 

গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-কশিমনার মো. জাকির হাসান জানান, চলতি মাসসহ বিগত সেপ্টেম্বরের বেতন বকেয়া রয়েছে। প্রতিমাসের ১০ তারিখে বেতন দেয়ার কথা থাকলেও তা পরিশোধ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।

সর্বশেষ ২৫ অক্টোবর বেতন পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদের পাওনাদি পরিশোধ না করায় বুধবার দুপুরে কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করে। এক পর্যায়ে দুপুর তিনটার দিকে তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করে রাখে। পরে বুধবার সন্ধ্যায় আগাগী সোমবার তাদের বকেয়া পরিশোধ করার ঘোষণা করা হলেও তারা তা মানেনি। সন্ধ্যা ৬টার দিকেও আলোচনা চলছিল। 

গাজীপুর সদর থানা পুলিশের ওসি মো. রফিকুল ইসলাম জানান, মহাসড়ক অবরোধ করে রাখায় যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলছে। 

এ ব্যাপারে কথা বলার মতো কারখানায় কাউকে পাওয়া যায়নি। ওই প্রতিষ্ঠানের মালিকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করতে চাইলে তাকেও পাওয়া যায়নি।

শিল্পাঞ্চল পুলিশ-২ (গাজীপুর)-এর সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল মোনায়েম জানান, সন্ধ্যায় তাদের বকেয়া বেতন রোববার/সোমবারের মধ্যে ব্যবস্থা করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হলেও শ্রমিকরা আজকের (বুধবার) মধ্যে তাদের পাওনাদি দাবি করে। তাদের এ দাবি পূরণ না হওয়ায় একপর্যায়ে সন্ধ্যায় শ্রমিকরা মহাসড়কের গাড়ি ভাঙচুর করতে শুরু করে। তখন পুলিশ এগিয়ে গেলে তাদের লক্ষ্য করেও তারা ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকে। এসময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কয়েক রাউন্ড টিয়ার সেল ছোঁড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে যানবাহন চলাচল শুরু করে। 


শিহাব খান/এমএএস